কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন স্বামীহারা বেগম। তার বাড়ি উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রামরাম সেন গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত দেলবর হোসেনের স্ত্রী।
বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই অভাব অঘটনের সঙ্গে অবিরাম লড়াইয়ে চলছে তার। একটু সুখের আশায় সন্তানের নিয়ে স্বামীর সঙ্গে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের দিল্লিতে যান। সেখানে গিয়ে স্বামী সন্তানরা মিলে বিভিন্ন ইটভাটায় কাজ করেন। পরিবারের সবার পরিশ্রমে মোটামুটি ভালো আয় রোজগার হতো। ভালোই দিন যাচ্ছিল। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বেগমের স্বামী দেলবর। স্বামীর মৃত্যুতে চার যুবতী মেয়ে ও এক শিশু ছেলে সন্তানকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন তিনি। স্বামীর শোক আর স্মৃতি বুকে লুকিয়ে আবার শুরু করেন জীবন সংগ্রাম। সেখানেই একে একে তিন মেয়ের বিয়ে দেন। কিন্তু আরও এক যুবতী মেয়ে এখনো বিয়ে দেওয়া বাকি। পাশাপাশি শিশু সন্তানের ভরনপোষণ। তবুও জীবন বাঁচাতে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। রাত দিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে ইটভাটায় কাজ করে তিলতিল করে টাকা সঞ্চয় শুরু করেন। তার স্বপ্ন ছিল জমানো টাকা নিয়ে দেশে ফিরে স্বামীর বসতভিটায় মাথা গোঁজার ঠাঁই করবেন। ধুমধামে মেয়ের বিয়ে দেবেন। কিন্তু তার জমানো সবকিছু কেড়ে নিয়ে শূন্য হাতে এক কাপড়ে তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে বিএসএফ।
অশ্রুসিক্ত নয়নে বেগম আরও বলেন, সন্তানদের নিয়ে পরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। পরে ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী ইসলাম হক আমাকে দুই বান্ডিল টিন কিনে দিয়েছে। তা দিয়ে ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে বাস করছি। খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে। পানি যে খাব টিউবওয়েল নাই।
এমন পরিস্থিতিতে সমাজের বৃত্তবান ও হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতা ছাড়া আমার টিকে থাকার আর কোনো উপায় নাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু মুসা বেগমের বিষয়ে বলেন, আমি উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে তার সহায়তায় জন্য যোগাযোগ করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা ত্রাণ পুনর্বাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বলেন, তার এমন পরিস্থিতির বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।