ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

শেখ হাসিনার পদত্যাগ

ইতিহাস হয়ে থাকল ৫ আগস্ট

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৪, ০৬:৫৫ পিএম
ছবি: সংগৃহিত

বাঙালি জাতির স্মরণীয় হয়ে থাকবে আজকের দিনটি। টানা ১৫ বছর পর আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়েছে সোমবার (৫ আগষ্ট)। শিক্ষার্থীরদের কোটা আন্দোলনের জেরে দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাথে নিয়ে গিয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানাকেও। আজ দুপুরের দিকে গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার (৫ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ডাকা ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসুচিতে সারা দেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয় গনভবনসহ রাজধানীর ভিন্নি স্থানে।  

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উত্তাল ছিল সারা দেশ। শিক্ষার্থীদের ডাকা এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে হত্যাকণ্ড, সহিংসতায় ফুসে উঠে ছাত্রছাত্রী থেকে দেশের আপামর জনতা।  শেখ হাসিনার সরকার একের পর এক কারফিউ দেয়। কিন্তু একপর্যায়ে সরকার কোটা সংস্কার করলেও সহিংসতার জেরে এক দফা দাবি উঠে শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনার সরকার একের পর এক কারফিউ দিলেও কোন সাড়া না পায়না।

সোমবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টার পর থেকে ঢাকার পথে ঢল নামে মানুষের। কারফিউ উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে শুরু করেন তারা। এক পর্যায়ে শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে।

এর আগে আজ সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনাকে নিয়ে উড্ডয়ন করেন। এ সময় তার ছোট বোন শেখ রেহানাও সঙ্গে ছিলেন। বিকেলে ৪টায় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে ঘরে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবো এবং এই সরকারের মাধ্যমে দেশের সব কার্যকলাপ চলবে। আমরা এখন মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাবো। গিয়ে এই সরকারের গঠনের ব্যাপারে আলোচনা করবো।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে সেনাপ্রধান বলেন, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি সব হত্যা, সব অন্যায়ের বিচার আমরা করবো। আপনারা সেনাবাহিনীর প্রতি, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমি সব দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের জানমাল। আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা আশাহত হবেন না। ইনশাআল্লাহ আপনাদের যত দাবি আছে সেগুলো আমরা পূরণ করবো এবং দেশে একটা শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবো। আপনারা আমার সাথে সহযোগিতা করেন। দয়া করে আর এই ভাঙচুর, হত্যা, মারামারি, সংঘর্ষ থেকে বিরত হন।

এর আগে, দুপুরে সেনা সদরদপ্তরে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

উল্লেখ্য, জুলাইয়ের শুরুতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। প্রথম সপ্তাহ রাজধানীর শাহবাগ ঘিরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলে। ১৪ জুলাই পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। এরপর দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সারাদেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে আন্দোলন। বাড়তে থাকে প্রাণহানি। অবশেষে সরকার পতনের এক দফা দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা।

 

আরবি/জেআই