ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

পূজামণ্ডপ অপসারণের যে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় অস্থায়ী পূজামণ্ডপ অপসারণের বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ কোনো পরিস্থিতিতেই অনুমোদিত নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছর দুর্গাপূজার সময় পূর্বানুমতি ছাড়া স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন জমিতে অস্থায়ী পূজামণ্ডপ স্থাপন করেছিল। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শর্ত দিয়েছিল, পূজা শেষ হলে মণ্ডপ সরিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা শর্ত লঙ্ঘন করে মণ্ডপ সরাতে অস্বীকৃতি জানায় এবং সেখানে ‘মহাকালী’ মূর্তি স্থাপন করে।

এরপর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বারবার স্মরণ করানোর পরও তারা মণ্ডপটিকে স্থায়ী করার চেষ্টা চালায়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে এবং রেললাইনের উভয় পাশে অবৈধভাবে নির্মিত দোকান ও রাজনৈতিক দলের অফিসসহ সব অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের জন্য একটি পাবলিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন’ প্রকল্পের জন্য ওই জমির খুব প্রয়োজন ছিল। তাই রেলওয়ে ২৪ ও ২৫ জুন অবৈধ দখলকারীদের স্মরণ করানোর পর ২৬ জুন শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে।

উচ্ছেদ চলাকালীন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে অস্থায়ী মণ্ডপের প্রতিমা নিকটবর্তী বালু নদীতে শ্রদ্ধার সঙ্গে বিসর্জন দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে, সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের জন্য অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ একটি নিয়মিত, আইনসম্মত প্রশাসনিক কার্যক্রম। দেশের আইন অনুসারে নির্মিত ধর্মীয় স্থাপনার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হলেও সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদিত নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘অস্থায়ী মণ্ডপ আয়োজকরা নিজেদের অঙ্গীকার লঙ্ঘন করে রেল কর্তৃপক্ষের আস্থা ও সদিচ্ছাকে কাজে লাগিয়েছে। বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার ও উপাসনালয় সুরক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

বাংলাদেশকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, উন্মুক্ত সমাজ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক নির্বিশেষে ধর্মীয় বিশ্বাসে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। তাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবাইকে তথ্য ও বাস্তবতা বিবেচনা করে প্রতিক্রিয়া জানাতে আহ্বান জানিয়েছে।