ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইউরোপীয় নেতা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছেন তিনি। যুদ্ধরত এই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বৈঠকের পর একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই বৈঠকে আমিও থাকব।’ হোয়াইট হাউসে বৈঠক শেষে ওভাল অফিসে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা বলেন। এ ছাড়া নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টেও একই কথা বলেছেন তিনি। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।
সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ভøাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছি। তবে কবে, কোথায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি। ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে সরগরম বিশ্বরাজনীতি। প্রায় তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে অনেকটাই রাজি ইউক্রেন। সুর নরম করেছে দেশটির মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার বসেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে। হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত সোমবারের বৈঠকে বেশ চুপচাপ ছিলেন জেলেনস্কি।
বৈঠকের আগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেনÑ যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে ইউক্রেনের ভূখ- ছাড় দেবেন কি নাÑ জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধ বন্ধ করা প্রয়োজন। রাশিয়াকে থামানো প্রয়োজন।’ জেলেনস্কি আরও বলেন, কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধ থামানোর ট্রাম্পের পরিকল্পনা সমর্থন করেন ইউক্রেনীয়রা। পুতিন ও ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের কথাও বলেন তিনি। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ট্রাম্প। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে অংশ নেন। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সংঘাত সমাধানে শান্তিচুক্তির জন্য উভয় পক্ষকেই কিছু ভূখ- ছাড় দিতে হবে। এমনটাই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি জানান, ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা গড়ে তুলতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনÑ উভয়কেই কিছু ভূখ-গত ছাড় দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘এটা সহজ নয়, হয়তো ন্যায়সংগতও নয়, কিন্তু যুদ্ধ শেষ করতে হলে এমনটিই করতে হবে।’ রুবিও গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ভøাাদিমির পুতিনের বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন। রুবিও জানান, ঠিক কোন সীমারেখা হবে তা নির্ধারণ করবেন পুতিন ও জেলেনস্কি, আর যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা হবে উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানে সমন্বয় করার জন্য থাকব।’ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইউক্রেনের জন্য একটি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় মিত্রদের পাশাপাশি অ-ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গেও কাজ করছে।