ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার সমন্বয় বাড়াচ্ছে। এ জন্য ৩০ অক্টোবর থেকে গুজরাট সীমান্ত ও আরব সাগরে শুরু হচ্ছে ‘অপারেশন ত্রিশূল’। ভারতীয় স্থল, নৌ এবং বিমানবাহিনীর এই সমন্বিত যুদ্ধমহড়া চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। গুজরাট সীমান্তে ভারতীয় সৈন্যের যুদ্ধমহড়া নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। মধ্য ও দক্ষিণ আকাশসীমাজুড়ে একাধিক বিমান রুটে বিমান চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ জারি করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পাক সরকার। যদিও আগামী ২৮-২৯ অক্টোবরের জন্য আকাশসীমা বন্ধের জন্য জারি করা ওই ‘নোটাম’ (বিমানকর্মীদের উদ্দেশে নোটিশ)-এর কোনো কারণ জানানো হয়নি। ভৌগোলিক অখ-তা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার সমন্বয় বাড়াতে ৩০ অক্টোবরের গুজরাট-রাজস্থান সীমান্ত ও আরব সাগরে শুরু হচ্ছে ‘অপারেশন ত্রিশূল’। ভারতীয় স্থল, নৌ এবং বিমানবাহিনীর এই সমন্বিত যুদ্ধমহড়া চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। কয়েক বছর ধরেই সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার সমন্বয় নিবিড় করতে তৎপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার।
বর্তমানে ভারতীয় স্থলসেনা, নৌসেনা এবং বিমানবাহিনীর দেশজুড়ে পৃথক পৃথক কমান্ড রয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল, ‘থিয়েটারাইজেশন’ পদ্ধতির মাধ্যমে তিন বাহিনীর ভিন্ন ভিন্ন কমান্ডের পরিবর্তে অভিন্ন ‘থিয়েটার কমান্ড’ গঠন করা। আমেরিকা, রাশিয়া, চীনের সশস্ত্র বাহিনীতে ‘থিয়েটারাইজেশন’ব্যবস্থা চালু রয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এর ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার। শত্রুর মোকাবিলার ক্ষমতাও বাড়বে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী পরিস্থিতিতে কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না পাক সেনাবাহিনী। ‘নোটাম’ জারির উদ্দেশ্যে স্যর ক্রিকসহ গুজরাত সীমান্তে সেনা সমাবেশ হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। উল্লেখ্য, সিন্ধু নদের ব-দ্বীপে তৈরি হয়েছে প্রায় ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খাঁড়িবেষ্টিত অঞ্চল স্যর ক্রিক।
জম্মু ও কাশ্মীরের মতোই এই অঞ্চলটির সীমান্ত চিহ্নিতকরণ নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ বিতর্ক রয়েছে। কচ্ছের রণের পশ্চিমে অবস্থিত নালা এবং জলাভূমি এলাকা পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে আলাদা করে রেখেছে গুজরাটকে। এই অঞ্চলে নজরদারির দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফের বিশেষ বাহিনী ‘ক্রিক ক্রোকোডাইল’। ১৯৯৯ সালে স্যর ক্রিক এলাকাতেই পাকিস্তানের গোয়েন্দা বিমানকে ধ্বংস করেছিল ভারতীয় বিমান বাহিনী। ওই ঘটনায় ১৬ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিল। সম্প্রতি স্যর ক্রিক অঞ্চলে নতুন করে পাক সেনার সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন