ঢাকা শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

নির্বাচনের আগেই ঠিক হচ্ছে বাজেট-কাঠামো

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ০৩:২৮ এএম

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এবারের আরএডিপি চূড়ান্ত করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যেই। সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে আরএডিপি চূড়ান্ত করা হয়। ডিসেম্বরে আরএডিপি প্রণয়নের লক্ষ্যে ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে ইআরডি। মূল উদ্দেশ্য আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে উন্নয়ন বাজেটের কাঠামো ও বরাদ্দ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, যাতে নির্বাচনের বছরেও প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি না হারায়।

ইআরডির ফাবা-৬ শাখা থেকে পাঠানো সভার নোটিশে জানানো হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পগুলোর ঋণ ও অনুদান বরাদ্দ নির্ধারণের লক্ষ্যে একাধিক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভাগুলো ২ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি-২ সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এসব সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

ইআরডির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রথম দিনের সভায় অংশ নেবে বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, খাদ্য, পানিসম্পদ, ভূমি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদসহ ১০টি মন্ত্রণালয়। পরদিন থাকবে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাণিজ্য, শিক্ষা, আইন, প্রতিরক্ষা ও আইসিটি বিভাগসহ আরও ৯টি মন্ত্রণালয়। ৪ নভেম্বর পরিবহন ও যোগাযোগ, সেতু, শ্রম, নারী ও শিশু, যুব ও ক্রীড়া, শিল্প, পল্লি উন্নয়নসহ ১৩টি মন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। শেষ দিনে ৫ নভেম্বর অংশ নেবে স্বাস্থ্য, প্রবাসী কল্যাণ, জ¦ালানি, স্বরাষ্ট্র, অর্থ বিভাগসহ ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সংস্থা।

ইআরডি জানিয়েছে, সভায় প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রকল্প পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিজ নিজ প্রকল্পের চাহিদা ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি উপস্থাপন করবেন। নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত না থাকলে পরবর্তী আপত্তি বিবেচনা করা হবে না। এ বৈঠকেই সংশোধিত এডিপির প্রকল্পভিত্তিক ঋণ ও অনুদানের চূড়ান্ত বরাদ্দ নির্ধারিত হবে। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা আসছে স্থানীয় উৎস থেকে এবং ৮৬ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে। সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতÑ ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এরপর রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাত (৩২ হাজার ৩৯২ কোটি), শিক্ষা (২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি), গৃহায়ন (২২ হাজার ৭৭৬ কোটি) ও স্বাস্থ্য খাত (১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা)।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, গত বছর নানা কারণে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি কমে গিয়েছিল। এবার সেই অজুহাত চলবে না। নির্বাচনের আগে আমরা চাই আরএডিপি সময়মতো চূড়ান্ত হোক, যাতে উন্নয়ন কার্যক্রমে গতি আসে। তিনি আরও বলেন, প্রায়ই দেখা যায় মার্চ-এপ্রিলে গিয়ে সংশোধিত এডিপি প্রণয়ন হয়, তখন মন্ত্রণালয়গুলো হুড়োহুড়ি করে ব্যয় বাড়ায়। এবার আমরা চেষ্টা করছি ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতেই সংশোধিত পরিকল্পনা অনুমোদন দিতে, যাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থিতিশীলতা আসে।

আরডির কর্মকর্তারা জানান, এবারের প্রক্রিয়ায় প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি, ব্যয়ক্ষমতা ও বাস্তবায়ন প্রতিবন্ধকতাÑ সবকিছুই বিবেচনায় নেওয়া হবে। নির্বাচনের সময়ও উন্নয়ন কর্মসূচি যাতে থেমে না যায়, সেই লক্ষ্যে ডিসেম্বরের মধ্যেই সংশোধিত এডিপি চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।