ঢাকা শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

এবার ওষুধে শতভাগ শুল্ক জারি ট্রাম্পের

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০২:২৫ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে তার দেশে ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপ করা হবে। এ ছাড়া দেশটিতে সব ধরনের ভারী ট্রাক আমদানিতে ২৫ এবং কিচেন ও বাথরুম কেবিনেটের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কও নেবে। 

ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে আমরা যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপ করব; যদি না কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ওষুধ উৎপাদনের কারখানা তৈরি করছে।’

ট্রাম্পের পোস্টগুলো দেখাচ্ছে, তিনি শুল্কের ব্যাপারে শুধু আগস্টে চালু হওয়া নতুন বাণিজ্য নীতি বা আমদানি করেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না। তিনি আরও শুল্কারোপ করতে চাইছেন এবং একে বিস্তৃত পরিসরে ব্যবহার শুরু করেছেন। তিনি মনে করেন, করগুলো তার দেশের সরকারের বাজেট ঘাটতি কমাতে এবং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কারখানা করছে বলতে বোঝানো হবে, জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে অথবা নির্মাণ শুরু হয়েছে। (যুক্তরাষ্ট্রে) যদি (অন্য দেশের) কোনো কারখানার কাজ শুরু হয়ে থাকে, তবে তার ওষুধে শুল্কারোপ করা হবে না। এ বিষয়ে আপনার মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ।’

শুল্কারোপের কারণ সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘এ শুল্কারোপের কারণ হলো বাইরের দেশ থেকে এসব পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বানের জলের মতো ঢুকছে।’

যদিও ট্রাম্প নতুন শুল্কারোপের আইনি ব্যাখ্যা দেননি, তবু তিনি বলেছেন, করগুলো ‘(মার্কিন) জাতির নিরাপত্তা ও অন্যান্য কারণে’ জরুরি। শুল্ক বা করের মতো বিষয় সাধারণত মার্কিন কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই মনে হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প নিজের ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন।

আর শুল্কারোপ না করতে মার্কিন ব্যবসায়ীরা হোয়াইট হাউসের কাছে কাতর অনুরোধ জানানোর পরও নতুন শুল্কের এ ঘোষণা এলো। এতে যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও জাপানের মতো দেশগুলোর বড় বড় ওষুধনির্মাতা বিপাকে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছর যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের ৬০০ কোটি ডলারের বেশি ওষুধজাতীয় পণ্য রপ্তানি করেছে বলে জাতিসংঘের এক হিসাব বলছে।

ভারী ট্রাকের ওপর শুল্ক পিটারবিল্ট ও ম্যাক ট্রাকসের মতো মার্কিন কোম্পানিগুলোর উপকারে আসবে। কিচেন ও বাথরুম কেবিনেটে শুল্কও স্থানীয় উৎপাদকদের সাহায্য করবে, বলেছেন ট্রাম্প।
দিন কয়েক পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র কাপড় বা চামড়ায় মোড়ানো আসবাবপত্র আমদানিতেও ৩০ শতাংশ শুল্ক নেওয়া শুরু করবে, বলেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ও চাকরি বাড়ানো এবং আরও কিছু রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিলে আগস্টের শুরুতেই ট্রাম্প ৯০টির বেশি দেশের পণ্যে শুল্কারোপ করেন।

এর আগে তিনি খাত ধরে ধরে ইস্পাত, কপার, অ্যালুমিনিয়াম, গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক বসিয়েছিলেন।
নতুন এ শুল্কের ফলে স্থানীয় উৎপাদকরা লাভবান হলেও ভোক্তাদের জন্য ‘খুবই খারাপ’ হবে, কেননা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, বলেছেন হিনরিখ ফাউন্ডেশনের ব্যবসা বিশেষজ্ঞ ডেবোরাহ এমস।

বৈশ্বিক বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর দেওয়া শুল্ক আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে থাকায় পণ্য ধরে ধরে দেওয়া আমদানি শুল্ক রাজস্ব আয়ে ‘ব্যাকআপ প্ল্যানের’ ভূমিকা রাখতে পারে, বলেছেন তিনি।