ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

বললেন আসিফ মাহমুদ

শাপলা চত্বরে হেফাজতের শহিদদের স্মৃতিস্তম্ভ হবে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ১২:২২ এএম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের শহিদদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে, যাতে দেশের মানুষ তাদের আজীবন স্মরণ করে। বিগত সরকারের সময় শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। যারা শাপলা চত্বরে শহিদ হয়েছেন, তাদের পরিবারগুলো ভয় পেত পরিচয় দিতে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে শহিদদের সম্মাননা দেওয়ার কাজ চলমান আছে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ ও মোদিবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত শহিদদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আসিফ মাহমুদ।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেদিন সরকার নিরপরাধ ও নিরীহ হেফাজতকর্মীদের হত্যা করে ভেবেছিল, দেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণমানুষের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে হত্যা করা যাবে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করে, জুলুম ও নির্যাতন কখনো স্থায়ী হয় না।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের সেই আন্দোলনের সূত্র থেকেই ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জন্ম। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিবাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। উপদেষ্টা বলেন, ২০১৩ সালে নবম শ্রেণিতে পড়তাম। টেলিভিশনে দেখেছি, লাখো জনতা কীভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেদিনের প্রকৃত তথ্য জাতিকে জানানো হয়নি। তিনি আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের শহিদদের নামের তালিকা সংবলিত একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ শাপলা চত্বরে তৈরি করা হবে। এতে এই আন্দোলন আগামী প্রজন্মের জন্য প্রেরণা জোগাবে।

অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ জন এবং ২০২১ সালের মার্চে মোদিবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শহিদ ১৯ জনের পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতকর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে তৎকালীন সরকার মনে করেছিল, জুলুম-নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন দমন করা যাবে। ওই আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান উপদেষ্টা খালিদ হোসেন। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

ধর্ম উপদেষ্টা অভিযোগ করে বলেন, সেদিন শাপলা চত্বরে সাত হাজারের বেশি পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা হেফাজতকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। প্রায় দেড় লাখ গুলি খরচ করা হয়েছিল। তারপরও ইতিহাস থেকে সেই ঘটনা মুছে ফেলা যায়নি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহিদী। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব মাওলানা মাজেদুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ অন্যরা।