সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন এবং কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এমনটি জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সাভার সিটি করপোরেশন গঠন হলে এটি হবে দেশের নবম সিটি করপোরেশন।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখার উপসচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ স্বাক্ষরিত এক সরকারি চিঠিতে সাভারকে সিটি করপোরেশন করার কথা জানানো হয়। বিভাগীয় কমিশনারের গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কাছে উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, সাভার এখন দেশের অন্যতম শিল্প, শিক্ষা ও ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে এক বিশাল নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু সীমিত সম্পদ ও জনবল নিয়ে পৌরসভা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নাগরিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে আশুলিয়া অঞ্চলে বিপুল গার্মেন্টস শিল্প, শ্রমিকবসতি ও আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠায় ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় নাগরিক সেবা প্রদান এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যানজট, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব ও পরিবেশ দূষণ সেখানে নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার জনসংখ্যার চাপ ও শহরের প্রসারে কেরানীগঞ্জ দ্রুত নগরায়িত এলাকায় পরিণত হচ্ছে, কিন্তু পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান না থাকায় এখানকার উন্নয়ন কার্যক্রম অপরিকল্পিতভাবে চলছে। সরকার মনে করছে, পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া গেলে কেরানীগঞ্জকে রাজধানীর পাশে একটি আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও প্রাণবন্ত উপশহর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার বলেন, গুরুত্ব বিবেচনা করে সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন গঠনের জন্য ঢাকার জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য ফাইল পাঠায়। প্রধান উপদেষ্টা সাভার সিটি করপোরেশন গঠনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এরপর তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
সাভার সিটি করপোরেশন গঠনের জন্য এখন স্থানীয় সরকার বিভাগ সম্ভব্যতা যাচাইসহ তাদের পর্যায়ের বিভিন্ন কাজ করবে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি এখনো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। সিটি করপোরেশন তাদের পর্যায়ের কাজ শেষ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে। এরপর তা নিকার (প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি) সভায় অনুমোদনের জন্য উঠবে।