প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য দারুণ সুযোগ এনেছে মধ্য আমেরিকার দেশ কোস্টারিকা। ‘ডিজিটাল নমেড ভিসা’ এর আওতায় আপনি দেশটিতে এক বছর বসবাস ও অনলাইনে কাজ করার বৈধ সুযোগ পাবেন। ভিসাটির আবেদন মূল্য মাত্র ১০০ মার্কিন ডলার বা ১২ হাজার ১০০ টাকা (প্রায়)। বিদেশি কোম্পানির কর্মী, অনলাইন ফ্রিল্যান্সার কিংবা উদ্যোক্তা, যে কেউ এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোস্টারিকা আয়ের জন্য স্থিতিশীল একটি দেশ। এই দেশের নাগরিকের গড় বেতন প্রায় ৪১১,৫১১ কোলোন (প্রায় ৮১০ মার্কিন ডলার) যা বাংলাদেশি টাকায় ৯৮ হাজার টাকা। এই ভিসার মাধ্যমে করমুক্ত আয়, আরামদায়ক আবহাওয়া এবং বিশ্বের নানা প্রান্তের পেশাদারদের একটি উন্মুক্ত কমিউনিটির অংশ হওয়ার সুযোগ পাবেন। কোস্টারিকায় প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রয়োজন।
আবেদনের যোগ্যতা
যারা পুরোপুরি অনলাইনে কাজ করেন এবং কাজের প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্ট কোস্টারিকার বাইরে অবস্থিত। যারা সর্বোচ্চ এক বছর কোস্টারিকায় থাকতে চান এবং চাইলে এক বছর বাড়াতে পারবেন। এককভাবে আবেদনকারীর ন্যূনতম মাসিক আয় ৩ হাজার ডলার (৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা)। পরিবার নিয়ে আবেদন করলে মাসিক আয় হতে হবে কমপক্ষে ৪ হাজার ডলার (৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা)।
অবকাঠামো ও জীবনযাত্রা
কোস্টারিকা একটি গণতান্ত্রিক দেশ এবং মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে স্থিতিশীল ও উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে জীবনযাত্রার মান বেশ উন্নত, বিশেষ করে রাজধানী সান হোসেতে। স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সুযোগও ভালো। কোস্টারিকাতে মূলত পর্যটন, কৃষি, হালকা প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি খাতে কাজের সুযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য, তাই এখানে বহুজাতিক সংস্থায় কাজের সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। বিদেশি কর্মীদের জন্য ইংরেজি ভাষা জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা হতে পারে, কারণ অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থায় ইংরেজি ভাষায় কাজ হয়। কোস্টারিকান আইন বিদেশিদের চেয়ে স্থানীয়দের নিয়োগের দিকে বেশি ঝোঁকে, তাই এখানে কাজ পেতে হলে প্রথমে সেখানে বসবাসের অনুমতি এবং কাজের অনুমতি প্রয়োজন হতে পারে। কোস্টারিকাতে গড় মাসিক আয় ১৮ হাজার ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ টাকা। কর্মপরিবেশ সাধারণত বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক হয়ে থাকে। কর্মঘণ্টা সাধারণত প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। কোস্টারিকা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত, তাই এখানে আউটডোর কার্যকলাপ এবং প্রকৃতির সান্নিধ্যে জীবন উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। বিদেশিদের জন্য একটি ডিজিটাল যাযাবর ভিসা (উরমরঃধষ ঘড়সধফ ঠরংধ) চালু করা হয়েছে, যা এক বছরের জন্য সেখানে বসবাস ও কাজের অনুমতি দেয়।
- দরকারি কাগজপত্র
- বৈধ পাসপোর্ট।
- কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজের রেকর্ড নেই, তার প্রমাণ।
- কোস্টারিকায় অবস্থানের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিমা।
আবেদন করার সময়
- অবশ্যই কোস্টারিকার বাইরে থাকতে হবে।
- গত ১২ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা বেতন স্লিপে আয়ের প্রমাণ।
- নিয়োগকর্তা বা ক্লায়েন্টের পক্ষ থেকে কাজের স্বীকৃতিপত্র বা চুক্তিপত্র।
- সর্বশেষ ৬ মাসের মধ্যে জারি করা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- অনলাইন কর্মসংস্থান বা স্বনিয়োজিত পেশার প্রমাণ।
- সব নথি স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করতে হবে।
কীভাবে আবেদন করবেন
প্রথমে সব দরকারি ডকুমেন্ট সংগ্রহ এবং পেশাদার অনুবাদক দিয়ে স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করিয়ে নিতে হবে।
কোস্টারিকার সরকারি ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অনলাইনে আবেদন জমা দিন।
আবেদন ফি ১০০ ডলার (১২ হাজার ১০০ টাকা) এবং ভিসা ইস্যু ফি ৯০ ডলার (১০ হাজার ৮৯০ টাকা) অনলাইনে পরিশোধ করুন।
আবেদন অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন। এটি সাধারণত ১৫-৩০ দিনের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হয়। ভিসা অনুমোদনের পর কোস্টারিকায় ভ্রমণ করুন এবং স্থানীয় ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে নিবন্ধন করে ডাইমেক্স রেসিডেন্স আইডি কার্ড সংগ্রহ করুন।
আবেদন প্রক্রিয়া
ভারতে অবস্থিত কোস্টারিকান দূতাবাস বাংলাদেশিদের ভিসা আবেদনপত্র পরিচালনা করে। আবেদনকারীদের ভারতে কোস্টারিকান দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে ভিসা আবেদনপত্র ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে।
দূতাবাসে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ই-মেইলের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে।
সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করুন, যার মধ্যে কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদসহ একটি বৈধ পাসপোর্ট, পরবর্তী ভ্রমণের প্রমাণপত্র
এবং অন্যান্য সহায়ক নথি অন্তর্ভুক্ত।
ভিসার প্রকারভেদ
পর্যটন ভিসা : পর্যটনের উদ্দেশ্যে যারা আসেন তাদের জন্য।
ছাত্র ভিসা : যারা একাডেমিক প্রোগ্রামে ভর্তি হচ্ছেন তাদের জন্য।
ব্যবসায়িক ভিসা : যারা ব্যবসা-সম্পর্কিত কাজের জন্য ভ্রমণ করছেন তাদের জন্য।