ময়মনসিংহে বাস কাউন্টারে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর মাসকান্দায় ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের কাউন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দেড় শতাধিক দুর্বৃত্ত অংশ নেয় বলে জানা গেছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে ঢাকাসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে মোটরসাইকেলে একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নগরীর মাসকান্দা বাস টার্মিনালে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা করে ইউনাইটেড বাস সার্ভিসের টিকিট কাউন্টারটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। বন্ধ করে দেয় ইউনাইটেড বাস সার্ভিসের কাউন্টার। সেখানে তারা স্লোগান দিতে থাকে, ‘আওয়ামী লীগ নেতা শামীমের কোনো বাস চলবে না।’ এ সময় কাউন্টারের ক্যাশে থাকা টাকা নিয়ে যায় তারা।
বাস কাউন্টারের এক কর্মী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, দুপুরের দিকে হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাস কাউন্টারে হামলা চালায়। হামলা করে কাউন্টার ভাঙচুর করে। এ সময় কাউন্টারে থাকা টাকা লুটপাট করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী বাসস্ট্যান্ডের আরেক কর্মী বলেন, যারা ভাঙচুর করতে এসেছিল। তারা স্লোগান দিচ্ছিল, আওয়ামী লীগ নেতা শামীমের কোনো বাস চলবে না। এসব স্লোগান দিতে দিতে কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়।
জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, আমি ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে ফিরছি। গফরগাঁও আসতেই একজন ফোন করে মাসকান্দার ঢাকা বাস কাউন্টার ভাঙচুর ও লুটপাটের কথা জানায়। কী কারণে, কে বা কারা ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও বিস্তারিত বলতে পারব।
তিনি আরও বলেন, বাস কাউন্টার ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় বেলা ১টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ, ময়মনসিংহ থেকে শেরপুর, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, পূর্বধলা, কিশোরগঞ্জসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ইউনাইটেড বাস সার্ভিসের কাউন্টারটি বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক শ যাত্রী। যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট করেও যেতে পারছেন না তাদের গন্তব্যস্থলে। তারা বলছেন, হঠাৎ এভাবে ইউনাইটেড বাস সার্ভিসের কাউন্টারটি ভেঙে ফেলা ও বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্য পৌঁছানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
মজিবুর রহমান নামে ঢাকাগামী এক যাত্রী বলেন, আমি অগ্রিম টিকিট করে রেখেছিলাম। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি কে বা কারা ভাঙচুর করেছে। এতে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমি ঢাকা গিয়ে সেখান থেকে রবিশাল যাব। লঞ্চের টিকিটও কেনা। এখন কোনোভাবেই ঢাকা যেতে পারছি না।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগস্টের আগে যারা বাসস্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন, তারা এখনো সেখানে সক্রিয়। এ নিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ভাঙচুর চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মোটর মালিকরা বাস চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন এবং নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।