চাকরি না ছেড়েই পালিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে মৌলভীবাজারের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত ধাপে ধাপে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। এ ছাড়া ৩৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ শিক্ষক ছুটি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীও আছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১ হাজার ৫২টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মরত ৫ হাজার ১৫৬ জন। তবে সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২২৩টি। ফলে শিক্ষক সংকটে শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পতনঊষার বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা খানম বলেন, ‘এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেখ সায়মা আজিজ কোনো ছুটি ছাড়া বিদেশে চলে গেছেন। শুনেছি, তিনি যুক্তরাজ্যে আছেন। তার বদলি শিক্ষকও এখনো আসেননি। শিক্ষক সংকট নিয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে।’
মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান জানান, সহকারী শিক্ষক ইসরাত জেরিন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অসুস্থতার অজুহাতে এক মাসের ছুটি নেন। পরে আর ফিরে আসেননি। শোনা যায়, তিনি বিদেশে গেছেন। বদলি শিক্ষক এখনো যোগ দেননি।
রাজনগরের চাটুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাবেরী রানী দেব চিকিৎসার অজুহাতে ছুটি নিয়ে আর চাকরিতে ফেরেননি। পরে জানা যায়, তিনিও বিদেশে গেছেন।
এমনভাবে কমলগঞ্জের কাউয়ারগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমরজিৎ স্বর্ণকার, সতিঝিরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নোভা নাওয়ার, সদর উপজেলার আগনসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্যামলী খানম, মৌলভীবাজার সদর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তাহমিদা ইসলামসহ আরও অনেকে ছুটি নিয়ে বিদেশে চলে গেছেন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন, ‘আমি যোগ দেওয়ার পর চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২৯ জনকে চাকরিচ্যুত করেছি। এর আগে আরও কয়েকজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে ৪৮ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মামলা চলছে আরও অনেকের বিরুদ্ধে। যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তারা আর চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন