ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ছেলে-বউয়ের নির্যাতনে গৃহহারা বৃদ্ধ দম্পতি

পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০২:০২ এএম

পিরোজপুরের নেছারাবাদে পাষ- ছেলে ও পুত্রবধূর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণে বাঁচতে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি। পরে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ওই দম্পতি হলেনÑ মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) ও তার স্ত্রী মোসা. মমতাজ বেগম।

অভিযোগে তারা জানান, বড় ছেলে মো. মিলন কৌশলে তাদের অর্ধেকের বেশি জমি নিজের নামে লিখে নিয়ে এখন কোনো ভরণপোষণ দেয় না। বরং সম্প্রতি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাবা-মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে। নিরুপায় হয়ে ওই দম্পতি নেছারাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, তবে এখনো কোনো বিচার পাননি তারা।

বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আমার তিন ছেলে। বড় ছেলে মিলনের কাছ থেকে চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা নিয়েছিলাম। সে কৌশলে আমাদের ২২ শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নেয়। পরে বাড়িতে থাকা বাগানের সুপারি পাড়াকে কেন্দ্র করে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি বেগম আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে। তাদের মারধরে আমার দুটি দাঁত পড়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছেলে এখন বাকি জমি লিখে দিতে বলছে। আমরা রাজি না হওয়ায় প্রায়ই নির্যাতন করে। গত ৬ অক্টোবর সকালে নারকেল-পাড়াকে কেন্দ্র করে আবার ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে ছেলে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। রাতে আবার আমাকে ও স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।’

শাহাদাৎ হোসেনের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ‘ছেলে মিলন কৌশলে জমি লিখে নেওয়ার পর এখন আমাদের কাছে টাকা চায়। না দিলে বাকি জমি লিখে দিতে বলে। বাড়ির কোনো ফসল ধরতে দেয় না। ৬ অক্টোবর আমার স্বামীকে মারধর করলে আমি বাধা দিই, তখন আমাকেও মারে। পরে আমরা স্থানীয় মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নিই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাদের ছেলে মিলন কারো কথা শোনে না। তাই আমি তাদের থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি।’

নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বনি আমিন বলেন, ‘বৃদ্ধ দম্পতি থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।