ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

প্রতিবন্ধী আতিকুরের কষ্টের জীবন

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:৫০ এএম

শারীরিক প্রতিবন্ধী আতিকুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে অভাব-অনটনের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। দুপচাঁচিয়া পৌর এলাকার চৌধুরীপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যানচালক আজহার হোসেনের বড় ছেলে আতিকুর ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণ করা আতিকুর হঠাৎ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর সম্পূর্ণ পঙ্গুত্বগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়েও আতিকুর লেখাপড়া চালিয়ে যান। তিনি ২০১৩ সালে দুপচাঁচিয়া পাইলট উচ্চ বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক (এসএসসি), ২০১৫ সালে দুপচাঁচিয়া কামরুজ্জামান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) এবং ২০২০ সালে একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন।

আতিকুরের পরিবার সম্পূর্ণ অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল। তার বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসারের একমাত্র উপার্জন করছেন। আতিকুর বিএ পাস করার পর সরকারি অফিসগুলোয় চাকরির জন্য দ্বারস্থ হলেও এখনো কোনো কর্মসংস্থান পাননি।

উপজেলার সাবেক কাউন্সিলর মহিদুল ইসলাম আতিকুরকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  সুমন জিহাদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে আতিকুরকে প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড দেওয়া হয়। ভাতা পেয়েও তিন মাস অন্তর তীব্র কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে।

আতিকুর জানান, ‘আমি ও আমার বাবা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে খ-কালীন চাকরির জন্য গিয়েছি। তবে আজও কোনো কর্মসংস্থান পাইনি। সমাজসেবা অফিস থেকে যদি ব্যাটারিচালিত অটো হুইলচেয়ার দেওয়া হয়, চলাফেরা অনেক সহজ হবে। গত পাঁচ মাস ধরে সরকারি ভাতাও পাওয়া যায়নি। আমরা খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি।’

আতিকুরের বাবা আজহার হোসেনও বললেন, ‘আমি একমাত্র ভ্যান চালিয়ে পরিবারকে চালাচ্ছি। আমাদের ছেলে প্রতিবন্ধী হলেও খুব মেধাবী, শুধু সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’

স্থানীয়রা আশা করছেন, পত্রিকার মাধ্যমে আতিকুরের কষ্টের কাহিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তাকে খ-কালীন চাকরি ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা হবে।