ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

একাই ৬১১ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিলেন প্রধান শিক্ষক

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৪:০৭ এএম

তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি। এ অবস্থায় কার্যত থমকে গেছে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। হঠাৎ বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ও বার্ষিক পরীক্ষা না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এদিকে সহকারী শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণির মোট ৬১১ শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা একাই নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক হাবিবা খন্দকার ইভা।

গতকাল বুধবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ ফাঁকা পড়ে আছে, কোনো সহকারী শিক্ষক নেই। তবে প্রতিটি ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন আর রুমে দায়িত্ব পালন করছেন অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের কর্মচারীরা। আবার কিছু অভিভাবক বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। এদিন শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বার্ষিক পরীক্ষার সময় শিক্ষকদের এমন কর্মসূচি পালনে ক্ষুব্ধ অভিভাবকসহ সচেতন মহল। তারা জানান, ছেলে-মেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি পালন করা মোটেই ঠিক নয়। পরীক্ষা শেষ করে তারা এ আন্দোলন করতে পারতেন। আমাদের সন্তানদের যে ক্ষতি হচ্ছে তা দেখবে কে। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের কর্মসূচি স্থগিত করার দাবি অভিভাবকদের। ভালো পরীক্ষা দিতে না পারলে ভালো রেজাল্ট করে পরবর্তী ক্লাসে সন্তানরা উঠবে কীভাবে? এমন প্রশ্নও রাখেন তারা।

শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবা খন্দকার ইভা বলেন, সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকলেও কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আসছে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হবে। তাই কয়েকজন অভিভাবক ও অফিস সহায়কের সহযোগিতায় পরীক্ষা কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। তবে একার পক্ষে এভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করা কঠিন বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি হাসিনুর রহমান লিটন জানান, কোমলমতী শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষার সময় আন্দোলন করায় তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে তারা নিরুপায়। সরকার আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত দিলেই এই সংকট নিরসন হবে।