ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ক্যাম্প থেকে অব্যাহতি স্বর্ণজয়ী তায়কোয়ান্দোকা দিপুকে!

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০২:১৭ এএম

নেপাল এসএ গেমসে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক জিতে লাল-সবুজের পতাকা গায়ে জড়িয়েছিলেন তায়কোয়ান্দোকা দিপু চাকমা। সেই দৃশ্য দেখে গর্বে বুক ফুলে উঠেছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (ওিবএ) কর্মকর্তাদের। যখন একটি স্বর্ণপদকের আশায় চাতক পাখির মতো ছিলেন বাংলাদেশের কর্মকর্তা, ঠিক তখনই তায়কোয়ান্দোর পুমসে থেকে সেই কাক্সিক্ষত পদক এনে দেন দিপু চাকমা। যেন হাফ ছেড়ে বাঁচেন লাল-সবুজের কর্তারা। এরপর আরও ১৮টি স্বর্ণ এলেও খরা কাটানো দিপুর স্বর্ণজয়ের মুহূর্তটি আজও ভুলতে পারেননি ক্রীড়াবিদ, কর্মকর্তারা। সেই দিপু এবার শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার হলেন জাতীয় তায়কোয়ান্দোর ক্যাম্প থেকে। ফেডারেশনের অভিযোগ, দক্ষিণ কোরিয়ান নতুন কোচ জুন গিউ চোইয়ের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানো, তায়কোয়ান্দোকাদের মধ্যে গ্রুপি, ওভারনাইট সজাগ থাকা এবং বাজে নেশার কারণেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দিপু।

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কর্নেল এরশাদুল হকের কথা, ‘দিপু ক্যাম্পে ওভারনাইট সজাগ থাকত। তায়কোয়ান্দোকাদের মধ্যে গ্রুপিং করত। গাঁজা খেত। পারিবারিক মামলায় হতাশাও তাকে ঝেঁকে ধরেছিল। এত কিছুর পরও তাকে রাখা হয়েছিল ক্যাম্পে। কিন্তু ১৩ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কোচ আনার পর সে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। আজেবাজে কথা বলেছে, যা একজন ক্রীড়াবিদসুলভ আচরণ নয়। তাই তাকে ক্যাম্প থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ পরিশেষে তিনি বলেন, ‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো। তাকে অনেক সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু সে তা কাজে লাগাতে পারেনি।’ তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দিপু পাল্টা অভিযোগের বল ঠেলে দেন ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের কার্টেই, ‘১৪ অক্টোবর নতুন কোচের আসা নিয়ে এমনিতেই একটি পোস্ট দিয়েছিলাম ফেসবুকে। সেখানে অনেকে মজা করে অনেক কথা লিখেছিল। আমিও তাদের জবাবে মজার ছলেই উত্তর দিয়েছিলাম। পরদিন তো আমাকে অব্যাহতিই দিয়ে দেয় ক্যাম্প থেকে।’

তিনি যোগ করেন, ‘আসলে এসব কিছু না, কমিটি বদলের পর খেলার উন্নতি করার কথা না ভেবে গেল ২৮ বছরে কে কী করেছে, সেই সব নিয়েই ব্যস্ত হয়ে আছেন ওনারা। শুধু তাই নয়, আগের কমিটির সঙ্গে আমাদের যত ছবি ছিল, এচিভমেন্টের পর সেই সবও সরিয়ে ফেলা হয়েছে ফেডারেশন থেকে। তা ছাড়া দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৫-২০ বছর ধরে ক্যাম্পের বাইরে থাকা প্রফেসর চঞ্চল স্যারকেও ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’ ক্যাম্পের বিষয়ে দিপুর অভিযোগ, ‘প্রতিদিন খেলোয়াড়দের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে বরাদ্দ ছিল ৩৫০ টাকা করে। সেই হিসাবে এক মাসে খেলোয়াড়দের হাতখরচ বাবদ ভাতা পাওয়ার কথা সাড়ে ১০ হাজার টাকা। আর খাবার-দাবার প্রতিদিন ৭৫০ টাকা করে।

এককালীন যাতায়াত ভাতা ৩ হাজার টাকা। এবং আনুষঙ্গিক আরও যা আছে যেমন ড্রেস, প্যাকেজের কিটসহ আরও যা যা লাগে সেগুলোর জন্য প্রতিজনের জন্য ৮ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে এগুলো আমাদের কিছুই দেওয়া হতো না। আমি কয়েকবার প্রতিবাদ করেছিলাম এটা নিয়ে। যে প্রথম মাসে ৫ হাজার টাকা কেন দেওয়া হলো, আরও বেশি তো আমাদের পাওনা। সেই সময় ফেডারেশনের কর্তারা বিভিন্ন ইস্যু দেখাত। পরবর্তীতে খেলোয়াড়েরা সবাই প্রতিবাদ করে চাপ দেওয়ার কারণে ওনারা ভাতাটা ৯ হাজার টাকা করে দেওয়া শুরু করল। এসব ব্যাপারে আমি সোচ্চার ছিলাম বলেই আজ আমার এই দশা।’