ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

উইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হারানো সম্ভব

মিরপুরের উইকেট নিয়ে ইতিবাচক মুশতাক

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০২:০২ এএম

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ হওয়ার পর মিরপুরের কালো মাটির উইকেট নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। এই উইকেটে ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক বার্তাই দিচ্ছে। তবে মিরপুরের উইকেট নিয়ে ইতিবাচক কথা বললেন বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ। তিনি ক্যারিয়ারে মিরপুরের চেয়েও বাজে উইকেট দেখেছেন বলে মন্তব্য করলেন। এই উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারানো সম্ভব বলে মনে করেন পাকিস্তানি এই কোচ।

মিরপুরের উইকেটে রিশাদ হোসেন ৬ উইকেট শিকার করে স্পিনে ভেলকি দেখান। মুশতাক মনে করিয়ে দিলেন ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দিল্লি টেস্টে ইনিংসে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন অনিল কুম্বলে। কুম্বলের স্পিন ভেলকি দেখানো সেই ম্যাচের পিচ ছিল মিরপুরের এখনকার পিচের চেয়েও নাজুক। মুশতাক বলেন, ‘অনেকবার, আমার ক্যারিয়ারে অনেকবার খেলেছি এমন উইকেটে। অনিল কুম্বলে যে ম্যাচে ইনিংসে ১০ উইকেট পেলেন, দিল্লীতে, সেই উইকেট এর চেয়েও খারাপ ছিল।’ এমন উইকেটে খেললে ৭-৮টি করে উইকেট হয়ত আপনি ঝুলিতে ভরতে পারতেন? তবে এ প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই মুশতাকের প্রতিবাদ, ‘না বন্ধু, কাজটা এতও সোজা না। সত্যি বলছি এত সহজ না। আমার কোচিং পয়েন্ট অব ভিউ হলোÑ বিশ^াস রেখে তোমার প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাও। এমন পিচে কখনো তোমাকে কমফোর্ট জোন থেকে বের হতে হবে। রিশাদ দুর্দান্ত বল করেছে, ধারাবাহিকভাবে ভালো লাইন-লেন্থে বল করে গেছে। এখন সে লম্বা সময় ধরে ভালো বল করতে পারে। এটা অত্যন্ত আনন্দের।’ উইকেট স্পিন বান্ধব হলেও স্পিনাররা যেন নিজেদের প্রক্রিয়া অনুযায়ী পারফর্ম করে যান, সে বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন মুশতাক। তিনি বলেন, ‘এমন উইকেট পেলে স্পিনাররা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। যখন আপনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন তখন আর প্রক্রিয়ার কথা মনে থাকে না। প্রসেস ইজ এভরিথিং। আপনাকে উইকেট পেতে ভালো ওভার করতে হবে, ভালো বল নয়। টার্নিং পিচে আপনাকে মেইডেন ওভার করতে হবে, ভালো ওভার করতে হবে, তখন উইকেট আসবেই। তাই ব্যাপারটা সাধারণ- প্রসেস ঠিক রেখে যাও উইকেট আসবেই।’

এদিকে, খুব শিগগিরই টেস্ট দলে জায়গা করে নেবেন রিশাদ হোসেন। এমন বিশ^াস কোচ মুশতাকের। তিনি জানিয়েছেন, রিশাদকে টেস্টে দেখতে পাওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। এখন পর্যন্ত টেস্ট অভিষেক না হলেও, ২৩ বছর বয়সি এই লেগস্পিনার ২১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। রিশাদ লম্বা ফরম্যাটেও দলের বড় সম্পদ হতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন মুশতাক। তিনি বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত, রিশাদ টেস্ট খেলবে। বিশেষ করে শেষ চার ব্যাটারদের বিরুদ্ধে, যেমন অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মতো দল যারা গভীর ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে নামে, সেখানে রিশাদের উচ্চতা, বাউন্স আর রং-ওয়াকওভারগুলো ভয়ংকর হতে পারে। শেষদিকের ব্যাটাররা ওর রং বল বুঝতেই পারে না। তবে জায়গাটা তাকে নিজের বোলিং দিয়েই অর্জন করতে হবে।’ রিশাদের উন্নতিতে আফগান স্পিন জাদুকর রশিদ খানের সঙ্গে তার আলাপও বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন মুশতাক, ‘এশিয়া কাপে আমি চেয়েছিলাম রিশাদ যেন রশিদের সঙ্গে কথা বলে। তারা দুজনের মধ্যে দারুণ কিছু ভাবের বিনিময় হয়েছে। রিশাদ আলাদা ধরনের বোলার, কিন্তু দুজনই স্পিন নিয়ে গভীর জ্ঞান রাখে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রশিদ বা আদিল রশিদের মতো সিনিয়রদের সঙ্গে তরুণদের কথা বলা খুব দরকার। এটা দারুণ ব্যাপার যে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এখন রিশাদকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়েছে।’ টাইগাররা ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততেও পারে। এমন আত্মবিশ^াস আছে মুশতাকের। তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমরা পারব।’ তিনি আরো বলেন, ‘কোচ হিসেবে আমাদের কাজ ছেলেদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস গড়ে দিতে সাহায্য করা। বিশ্বাসই সবচেয়ে বড় জিনিস। যদি আমার বিশ্বাস দুর্বল হয়, খেলোয়াড়েরাও সেটা টের পাবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানসিকতার খেলা, বিশ্বাস আর ধৈর্যই এখানে সব। বাংলাদেশের ছেলেরা ভীষণ প্রতিভাবান, তারা চাইলে যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।’