সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে একটি ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় প্রায় ১৫ বিঘা জমির কাঁচা ধান পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ইউএনও, কৃষি অফিস ও বন বিভাগ কর্মকর্তা বরাবর ক্ষতিপূরণের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা থানার ধুবিল ইউনিয়নের আমশাড়া গ্রামের রাকিব সুপার ব্রিকস নামক ইটভাটার চিমনি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আমশড়া উত্তর পাড়া, শ্যামেরঘোন ও তাড়াশ উপজেলার খোর্দ মাধাইনগর গ্রামের ১৫-২০ বিঘা জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক কৃষকের পেয়ারা বাগানের পেয়ারা ও গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে তারা লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা যায়, গত (১৪ মে) রাকিব সুপার ব্রিকস ভাটার চিমনি খুলে দেওয়ায় আগুনে আশপাশের প্রায় ১৫ বিঘা জমির কাঁচা ধান পুড়ে গেছে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে আমশাড়া গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম, শ্যামেরঘোন গ্রামের কৃষক মজনু শেখ বাদশা ও খোর্দ মাধাই নগর গ্রামের কৃষক সুধীর চন্দ্র সরকার রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা ও বন কর্মকর্তা বরাবর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
কৃষক সিরাজুল ইসলাম, মজনু শেখ বাদশা, সুধীর চন্দ্র সরকার জানান, নিমগাছির পুল্লা গ্রামের আব্দুল কাযুম অবৈধভাবে কৃষিজমির ওপর ভাটা স্থাপন করে কৃষকদের ক্ষতিসাধন করেছেন। গত বছরও তার ভাটার আগুনে কৃষকের ধান পুড়ে যায়। এ বছর ১৫ বিঘা ধান নষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন ফল ও গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।
রাকিব সুপার ব্রিকস ইটভাটার মালিক পক্ষকে বিষয়টি জানানো হলে তারা জানান, তাদের ইটভাটার কারণে জমির কোনো ক্ষতি হয়নি। তারা কোনো ক্ষতিপূরণ দেবেন না বলেও জানান। এ ছাড়াও কৃষকদের মাথায় সমস্যা হয়েছে বলে ডাক্তার দেখানোর কথা বলেন।
তিন কৃষক বলেন, ‘উপজেলা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থ্যা নেওয়া হয়নি। আমরা কৃষক মানুষ। ফসলই আমাদের চালায়। আর সেই ফসলই ইটভাটার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমরা কীভাবে সারা বছর চলব। আমরা আমাদের ফসলের ক্ষতিপূরণ চাই।’
রাকিব সুপার ব্রিকস ইটভাটার ম্যানেজার শাহ আলম মালিক আব্দুল কাযুমের বরাত দিয়ে বলেন, ‘আমাদের ইটভাটার কারণে কৃষকের কোনো ক্ষতি হয়নি।অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণেও বেশি সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করার জন্য ফসলের ক্ষতি হতে পারে। ভাটার কারণে জমির ফসল নষ্ট হলে আরও বেশি হবে। এটা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য অফিসার সরেজমিনে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।’
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’