কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের বাফার হুক ও হোস পাইপ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় ইঞ্জিন মূল ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে ট্রেনের ১৯টি বগি রেললাইনে দাঁড়িয়ে থাকে, আর ইঞ্জিনটি একাই চট্টগ্রাম অভিমুখে চলে যায়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সারে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কমলমুন্সির হাট স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
প্রায় ৯০০ যাত্রী নিয়ে চলাচলকারী ট্রেনটি যখন পটিয়ায় পৌঁছায়, তখনই যান্ত্রিক এই ত্রুটি দেখা দেয়। দুর্ঘটনার পরপরই যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা শেষে রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থেকে একটি উদ্ধারকারী ইঞ্জিন পাঠিয়ে বগিগুলোকে উদ্ধার করা হয়।
কী ঘটেছিল?
পটিয়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ পাভেল জানান, কক্সবাজার থেকে আসার পথে ট্রেনটি চন্দনাইশের দোহাজারী অতিক্রম করে পটিয়ায় প্রবেশের সময় ইঞ্জিনের বাফার হুক ভেঙে যায়। এতে ইঞ্জিন বগিগুলো থেকে আলাদা হয়ে চট্টগ্রামের দিকে চলে যায়, আর বগিগুলো রেললাইনে স্থির হয়ে পড়ে। এ সময় যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে অবস্থান নেয়।
পূর্বাঞ্চল রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘বগি বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকারী ট্রেন পাঠানো হয়। এরপর বগিগুলো চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে পুনরায় যাত্রা শুরু করে।’
নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
এই ধরনের ঘটনা এটি প্রথম নয়। মাত্র এক মাস আগেই, গত ২৬ জুলাই, কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড ব্রেক বগির হুক ভেঙে মূল ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার গোমদণ্ডী স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সেবারও ট্রেনটি ৩০ মিনিট থেমে থাকার পর বিচ্ছিন্ন বগি ফেলে দিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে চলে যায়।
একাধিকবার একই ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি ও নিরাপত্তা ঘাটতির ঘটনায় রেল চলাচলব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাচ্ছেন যাত্রীরা। তারা প্রশ্ন তুলছেন- রেলের যান্ত্রিক ত্রুটি ও দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বারবার সাধারণ যাত্রীরা কেন ভোগান্তিতে পড়বে?
যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে
গতকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বের) ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ও অনিশ্চয়তা নিয়ে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। উদ্ধারকারী ইঞ্জিন পৌঁছানোর পর বগিগুলো চট্টগ্রামে এনে পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।