চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৩ বাগান মালিকসহ ৭ জনকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার (২৫ মে) সকালে উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলের পওলি ছড়া পাহাড়ি এলাকা থেকে ৩ জন বাগান মালিকসহ সাতজনকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রবিউল হোসেন কপিল অপহরণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃতদের মধ্যে রয়েছেন- বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা মো. ওয়াসিম (৪৫), পটিয়ার মৌলভীবাজার এলাকার হায়দার আলী (৩০), খুশি বেগম (৪০) ও রতনপুর এলাকার এক মালিকের বাগানে কর্মরত শ্রমিক মো. নাছির (৩৮)। বাকি তিনজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ৮-১০ জনের একটি দল বাগানে কাজ করতে গেলে হঠাৎ করেই পাহাড় থেকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বেরিয়ে এসে তাদের ঘিরে ফেলে। এরপর অস্ত্রের মুখে সাতজনকে জিম্মি করে গহীন জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়।
কেলিশহর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকার লোকজন প্রতিদিনের মতো বাগানে গিয়েছিল। সকালেই খবর আসে তাদের কয়েকজনকে সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ নেই, পরিবারের লোকজন দুশ্চিন্তায় পাগলপ্রায়।’
ওয়ার্ড সদস্য রবিউল হোসেন বলেন, ‘এই এলাকায় কিছুদিন ধরে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বাড়লেও প্রশাসনের তেমন নজর ছিল না। আজকের ঘটনার পর সবাই আতঙ্কিত।’
ঘটনার খবর পেয়ে পটিয়া থানা পুলিশের একটি দল মৌলভীবাজার সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছে। তবে রাত পর্যন্ত অপহৃতদের উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই কেলিশহর, হাইদগাঁও, কচুয়া ও খরনা ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের তৎপরতা চলছে। চাঁদাবাজি, অপহরণ, ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো ঘটনা বাড়লেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে সাধারণ বাগান মালিক ও শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত জীবনঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে কাজ করছেন।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, বারবার এমন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকায় পাহাড়ি অঞ্চলের নিরাপত্তা দিন দিন সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। অবিলম্বে অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান জোরদার এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনের ব্যবধানে ৩০ জন অপহরণের শিকারের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও মুক্তিপণ দিয়ে ২৬ জন ফিরে এলেও এখনও চারজন অপহরণ চক্রের কবলে রয়ে গেছে।
এর মধ্যে মুদি দোকানি জসীমের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা যায়।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে এবং সাঁড়াশি অভিযানের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় লোকজন।
আপনার মতামত লিখুন :