ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আ.লীগ নেতার কাছ থেকে জমি উদ্ধার, ১০ হাজার বৃক্ষ রোপণ

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৯:৫০ এএম
উদ্ধার করা জমিতে গাছের চারা রোপণ করছেন প্রশাসন।। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর বিট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জবরদখলে থাকা বন বিভাগের প্রায় ৩০ বিঘা জমি অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী অভিযানে এ জমি উদ্ধার করে বন বিভাগ। উদ্ধার করা জমিটির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।

স্থানীয় সূত্র ও বন বিভাগ জানায়, সাতখামাইর বিট এলাকার ওই জমি দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছিলেন শ্রীপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন মোড়ল এবং তার ছেলে বরমী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির মোড়ল। তারা ওই জায়গা ভাড়া দিয়ে পোলট্রি ও গরুর খামার গড়ে তুলেছিলেন এবং ভাড়া বাবদ আদায় করেছেন লাখ লাখ টাকা।

শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান রিপন জানান, ‘মাস দুয়েক আগে জমি উদ্ধারে গেলে সাহাব উদ্দিন মোড়ল ও তার অনুসারীদের হুমকি ও বাধার মুখে পিছু হটতে হয়। তবে এবারের অভিযানে প্রশাসনের সহযোগিতায় জমিটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, “উদ্ধারকৃত জমিতে আমরা বহেরা, মেহগনি, হরতকি, লটকন, চিকরাশি, আতা, পিতরাজ জামসহ ১০ হাজার বনজ বৃক্ষের চারা রোপণ করেছি।’

অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন মোড়ল নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ক্ষমতার দাপটে জমি দখল করিনি। ওই জমির প্রকৃত মালিক আমি। বন বিভাগ এখন এসে দাবি করছে এটা তাদের জমি। আমি এ বিষয়ে আদালতে মামলা করেছি।’

স্থানীয়রা জানান, সাহাব উদ্দিন মোড়ল আগে শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বরমী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। তার ছেলে জাকির মোড়লও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য।

কালিয়াকৈরে বনভূমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

এদিকে একই দিনে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর এলাকাতেও বন বিভাগের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়।  এদিন বেলা ১১টা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাউছার আহামেদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম জানান, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ভূমিদস্যুরা বনের গাছ কেটে ঘরবাড়ি, দোকান তৈরি করে জমি দখল করে নিয়েছিল। আমরা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমি পুনরুদ্ধার করেছি এবং সেখানে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

অভিযানে বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক সামছুল আরেফিন,  ইকবাল হোসেন চৌধুরী, চন্দ্রা রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম, বিট কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন, শরিফ খান চৌধুরী, রেজাউল বারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাউছার আহামেদ জানান, ‘অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত থাকবে। বন বিভাগের জমি রক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’