রূপগঞ্জ উপজেলার ছনেরটেক-নগরপাড়া খালের ওপর স্থাপিত বেইলি ব্রিজটি প্রায় তিন যুগ ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
১৯৯১ সালে নির্মিত এই বেইলি ব্রিজটি নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন নগরপাড়া-মাঝিনা সড়কে অবস্থিত। নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই ব্রিজের নাট-বল্টু খুলে যেতে শুরু করে। দীর্ঘ ৩৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের সংস্কার হয়নি। ফলে ভারী যানবাহনের চলাচলে ব্রিজটি কাঁপতে থাকে, যা ভয়ংকর বিপদের পূর্বাভাস দিচ্ছে।
স্থানীয় দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা ইসলাম মাইশা জানান, ‘এ ব্রিজের নাট-বল্টু কবেই খুলে গেছে। গাড়ি উঠলেই বিকট শব্দ হয়। রাতে ঘুম ভেঙে যায়, অনেক সময় ভয়ও লাগে।’
অটোরিকশাচালক মুসা মিয়া বলেন, ‘প্লেটের ফাঁকায় গাড়ির চাকা আটকে এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। প্রায়ই গাড়ি পড়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বড় দুর্ঘটনা অনিবার্য।’
স্থানীয়রা জানান, ডেমরা-কালিগঞ্জ সড়ক ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এবং চনপাড়া-নগরপাড়া-গাজী বাইপাস (নতুন) সড়কের ব্যবহার বাড়ায় বেইলি ব্রিজটির গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। খামারপাড়া, নগরপাড়া, কামশাইর, বালুরপাড়, ঈদেরকান্দি, নয়ামাটি, দাসেরকান্দি এবং শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিক থেকে বহু যানবাহন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে।
ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি মামুন মিয়া জানান, ‘এই ব্রিজে নিয়মিত যানজট হয়। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দারুণ বিঘ্ন ঘটছে। ব্রিজটি অচিরেই মেরামত করা না হলে জনদুর্ভোগ বাড়বে।’
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন, আমার করার কিছু নেই।’
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমার জানা মতে নারায়ণগঞ্জে কোনো বেইলি ব্রিজ নেই। কিছু ছবি পাঠিয়ে দিন, দেখি ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সম্ভব হলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করব এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে সমাধানের চেষ্টা করব।’
স্থানীয়দের দাবি, মানুষের জানমাল রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ব্রিজটি সংস্কার কিংবা নতুন করে নির্মাণ করা হোক।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন