ছানা (চিজ কোটেজ বা পনির) আমাদের খাবারের একটি পরিচিত উপাদান, যা দুধ জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও অত্যন্ত উপকারী। প্রাকৃতিক প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে ভরপুর ছানা সব বয়সের মানুষের জন্যই উপযুক্ত।
প্রোটিনের চমৎকার উৎস
ছানা হলো উচ্চপ্রোটিনযুক্ত খাবার। যারা মাংস বা মাছ কম খান, তাদের জন্য ছানা হতে পারে চমৎকার একটি বিকল্প উৎস। এটি পেশি গঠনে সহায়ক এবং ওজন কমানোর জন্য ডায়েটকারীদের মাঝে জনপ্রিয়।
হাড় ও দাঁত মজবুত করে
ছানায় থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, যা হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে। শিশুদের বৃদ্ধি এবং বয়স্কদের অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধেও এটি অত্যন্ত কার্যকর।
হজম শক্তি বাড়ায়
ছানায় উপস্থিত প্রোবায়োটিক উপাদান অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে সক্রিয় করে, ফলে হজমের গতি বাড়ে এবং গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য কমে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
নিয়মিত পরিমাণে চর্বিমুক্ত ছানা খেলে শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদয়ের কার্যক্রম উন্নত করতে সহায়তা করে।
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক
ছানায় থাকা আয়রন ও ভিটামিন বি১২ রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। এটি রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে নারীদের জন্য।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী
ছানায় থাকা ভিটামিন A, D ও E ত্বককে রাখে উজ্জ্বল ও মসৃণ। পাশাপাশি, প্রোটিন ও বায়োটিন চুল পড়া কমায় ও নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
লো-কার্ব ও হাই-প্রোটিন হওয়ায় ছানা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো একটি খাবার। এটি ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ছানা শুধু একটি সুস্বাদু উপাদান নয়, বরং এটি একটি পুষ্টির খনি। শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী, খেলোয়াড় বা ডায়েটকারীদের জন্য ছানা অত্যন্ত উপকারী একটি খাদ্য। এটি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে শরীরের গঠন ভালো থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে অতিরিক্ত ছানা খাওয়ার ক্ষেত্রে চর্বির মাত্রা ও ল্যাকটোজ সংবেদনশীলতা বিবেচনা করা উচিত।