ঢাকা শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

খিরা খাওয়ার নানা উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
ঝুড়িতে খিরা। ছবি- সংগৃহীত

গরমের দিনে এক টুকরো খিরা যেমন প্রশান্তি এনে দেয়, তেমনি এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। পানিসমৃদ্ধ, পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য এই ফলটি শুধুমাত্র রুচি বাড়ায় না, বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

চলুন জেনে নিই খিরা খাওয়ার নানা উপকারিতা-

১. শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ

খিরার ৯৫% অংশই পানি। তাই গরমের দিনে বা শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে এটি একটি চমৎকার খাদ্য। নিয়মিত খিরা খেলে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ত্বকও সতেজ থাকে।

২. ওজন কমাতে সহায়ক

খিরা ক্যালোরি ও ফ্যাটবিহীন খাবার। এটি খেলে পেট ভরে, কিন্তু শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ হয় না। ফলে ওজন কমানোর ডায়েটে এটি রাখা অত্যন্ত কার্যকর।

৩. হজমশক্তি বাড়ায়

খিরার ফাইবার হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে ভূমিকা রাখে।

৪. ত্বকের জন্য উপকারী

খিরার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত খিরা খাওয়া ত্বকের বলিরেখা ও বার্ধক্যের ছাপ কমাতে পারে।

৫. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খিরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক টনিকের মতো কাজ করে।

৬. দেহের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে

খিরার প্রাকৃতিক ডিউরেটিক (প্রস্রাববর্ধক) গুণ শরীর থেকে টক্সিন বা ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। এটি কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

৭. চোখের ক্লান্তি দূর করে

দীর্ঘ সময় কাজ করার পর চোখে ক্লান্তি দেখা দিলে খিরার টুকরো কেটে চোখের ওপর রেখে দিলে আরাম পাওয়া যায়। এটি ডার্ক সার্কেল কমাতেও সাহায্য করে।

৮. হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করে

খিরার মধ্যে থাকা ভিটামিন কে হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং হাড়কে মজবুত করতে ভূমিকা রাখে।

খিরা যখন খাবেন-

১/ সকালের নাস্তার পর বা হালকা ক্ষুধা লাগলে খিরা খেতে পারেন। এটি হজমে সাহায্য করবে এবং সারা দিন শরীর হাইড্রেটেড থাকবে।

২/ দুপুরের খাবারের সঙ্গে সালাদের অংশ হিসেবে খিরা খেলে হজম ভালো হয়। খাবার হালকা থাকে এবং পেট পরিষ্কার রাখে।

৩/ গরম বা প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য যেকোনো সময় খেতে পারেন। এতে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হবে।

খিরা খাওয়ার সর্তকতা-

১/ খালি পেটে বেশি খিরা খেলে গ্যাস্ট্রিক বা পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। তাই সকালে বা ক্ষুধার্ত অবস্থায় সরাসরি খাওয়ার আগে অন্য খাবারের সঙ্গে বা পরে খান।

২/ খিরা অতিরিক্ত খেলেও গ্যাস বা বদহজম হতে পারে। দিনে ১-২ বার খেলে উপকার হয়, কিন্তু একবারে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো।

৩/ খুব রাতে বা ঘুমানোর ঠিক আগে খেলে ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে যাদের ঠান্ডা-কাশি বা সাইনাসের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আরও সাবধানে খেতে হবে।

৪/ অনেক সময় খিরার গায়ে রাসায়নিক বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। তাই ভালোভাবে ধুয়ে বা খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া উত্তম।

৫/ ঠান্ডা-কাশি বা গলা ব্যথার সময় বেশি খিরা খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।

৬/ যাদের কিডনির গুরুতর সমস্যা রয়েছে তাদের বেশি পানি জাতীয় খাবার খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।