কর্মব্যস্ত দিনে ক্লান্তি দূর করা থেকে শুরু করে শরীরের নানা উপকার তবে অতিরিক্ত ব্ল্যাক কফি হতে পারে বিপদের কারণ,বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই ব্ল্যাক কফিকে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে নিয়েছেন। দুধ-চিনি ছাড়া তৈরি এই কফি ক্যালোরি কম এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে ক্যাফেইন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং কিছু ভিটামিন শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। তবে সঠিক পরিমাণ না মেনে অতিরিক্ত ব্ল্যাক কফি খেলে কিছু মারাত্মক অপকারিতাও দেখা দিতে পারে।
ব্ল্যাক কফির উপকারিতা
দ্রুত ক্লান্তি দূর করে
ব্ল্যাক কফিতে থাকা ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্র উদ্দীপিত করে, ফলে শরীরে উদ্যম আসে এবং ঘুম ঘুম ভাব দূর হয়।
ওজন কমাতে সহায়তা করে
ব্ল্যাক কফি বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) বাড়িয়ে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট পোড়াতে সাহায্য করে, যা ওজন কমাতে কার্যকর।
স্মৃতিশক্তি উন্নত করে
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পরিমিত ব্ল্যাক কফি পান করলে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে এবং আলঝেইমার বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর
ব্ল্যাক কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিকেল দূর করে এবং কোষের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
সঠিক পরিমাণে ব্ল্যাক কফি খেলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং হার্টের কার্যক্রম ভালো থাকে, তবে মাত্রা ছাড়ালে বিপরীত প্রভাব পড়তে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, নিয়মিত সীমিত ব্ল্যাক কফি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
লিভার সুস্থ রাখে
ব্ল্যাক কফি লিভারের কার্যক্রম উন্নত করে এবং লিভারের ফ্যাট জমা কমাতে সহায়তা করে, যা ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ব্ল্যাক কফির অপকারিতা
অতিরিক্ত উত্তেজনা ও উদ্বেগ
বেশি ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে ঘাম, উদ্বেগ, হাত কাঁপা বা মাথাব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ঘুমের ব্যাঘাত
রাতের দিকে ব্ল্যাক কফি খেলে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
হজমে সমস্যা
খালি পেটে বেশি কফি খেলে অ্যাসিডিটির প্রবণতা বেড়ে যায় এবং পেট জ্বালাপোড়া, গ্যাস, বদহজমের সমস্যা হতে পারে।
কিডনির ওপর চাপ
অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে কিডনির ওপর চাপ পড়তে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা
যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্ল্যাক কফি রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ব্ল্যাক কফি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
দিনে ১-২ কাপ ব্ল্যাক কফি খাওয়া নিরাপদ।
খালি পেটে না খাওয়াই ভালো।
রাতে দেরিতে কফি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
যারা গ্যাস্ট্রিক, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে ভুগছেন, তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কফি খাওয়া উচিত।
ব্ল্যাক কফি আমাদের শরীরের জন্য অনেকটাই উপকারী হতে পারে, যদি তা সঠিক নিয়ম ও পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা হয়। তবে মাত্রার বাইরে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শরীরে। তাই বুঝে শুনে ব্ল্যাক কফি পান করুন, শরীরকে সুস্থ রাখুন।