ঢাকা শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহার করল পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের আশ্বাসে গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন।

বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আরইবি-পিবিএস সংস্কারের মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের বিদ্যুৎ বৈষম্য দূর করে মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবার লক্ষ্যে একটি টেকসই বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেম বিনির্মাণে আমরা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিভিন্ন সময়ে একাধিক কমিটি গঠন করলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অসহযোগিতার কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারী পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই শুরু হয় মামলা, চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত, সংযুক্তসহ নানা ধরনের দমন-পীড়ন।

এতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২১ মে থেকে শহীদ মিনারে ১৬ দিনব্যাপী আন্দোলনের পর বিদ্যুৎ বিভাগের লিখিত আশ্বাসে ৫ জুন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুন বিদ্যুৎ বিভাগ দুটি কমিটি গঠন করে। কিন্তু আমরা লক্ষ করেছি, ওই কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে দমনপীড়নের মাধ্যমে হয়রানি এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। 

বার্তায় বলা হয়েছে, আন্দোলনের কারণে এখন পর্যন্ত ১৭২ জনের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, ২০ জন কর্মকর্তাকে দীর্ঘদিন জেল খাটানো, ৪০ জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত, ৮৭ জনকে বরখাস্ত ও সংযুক্ত, সাড়ে ৬ হাজার জনকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮ জন সহকর্মীকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত এবং ২৮ জনকে স্ট্যান্ডরিলিজপূর্বক বরখাস্ত করা হয়েছে। সংকট সমাধানের লক্ষ্যে ৪ দফা দাবিতে গত ৩১ আগস্ট থেকে ৫ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হলেও দমনপীড়ন বন্ধ না করা এবং সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে গণছুটি কর্মসূচি ঘোষণা করতে হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, আপনারা জানেন, দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের আন্দোলনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কখনোই বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং গ্রাহক সেবা বন্ধ রাখেনি। বিদ্যমান গণছুটি কর্মসূচিতে ৮০টি সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ৩৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উপকেন্দ্রগুলো চালু রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ না থাকায় আরইবি কর্তৃক বারবার ভুল তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগকে বিভ্রান্ত করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা উপেক্ষা করে আমাদেরকে দেশবিরোধী শক্তি/নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রকারী ইত্যাদি ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিত।

বার্তায় বলা হয়েছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা দেশবিরোধী শক্তি নই সেটা প্রমাণের জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিদ্যুৎ উপদেষ্টা আহ্বান জানিয়েছেন। কর্মসূচি প্রত্যাহার করে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের বিষয়ে উপদেষ্টা মহোদয়ের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে আশ্বস্ত করা হয়েছে। দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট ও জনদুর্ভোগ বিবেচনায় বিদ্যমান সংকটের সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান গণছুটি কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।