বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতার। প্রতিনিয়তই কে কাকে ছাড়িয়ে যাবেন তা নিয়ে চলছে লড়াই। ক্রীড়াঙ্গনে এ প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশি।
কিংবদন্তির তালিকায় নাম ওঠাতে ক্রীড়াবিদরা ঘাম ঝড়াচ্ছেন। প্রতিদিনই পুরোনো রেকর্ড ভেঙে গড়ে উঠছে নতুন রেকর্ড।
ক্রীড়াঙ্গনে এমনই এক নতুন প্রতিযোগী বার্সেলোনার তরুণ ফরোয়ার্ড লামিন ইয়ামাল। দিন দিন তিনি গড়ছেন নতুন রেকর্ড। এরই মধ্যে ছাড়িয়ে গেছেন মেসি-রোনালদোদের।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি যা করে দেখিয়েছেন, তা অতীতে আর কেউ করতে পেরেছেন কি না এমন প্রশ্ন অনেকেরই।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্য দিয়ে বার্সার জার্সিতে নিজের শততম ম্যাচ খেলেছেন এই তরুণ। এই ম্যাচে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি।
মিকেতেরিয়ান, ডিমারকোদের মতো বিশ্বসেরা ডিফেন্স লাইনকে রীতিমতো নাকানিচুবানি খাইয়েছেন তিনি। করেছেন দুর্দান্ত একটি গোলও।
ইয়ামাল এই বয়সে যতটুকু অর্জন করেছেন, তা পেলে ছাড়া আর কেউ ওই বয়সে পারেননি। এরই মধ্যে বার্সার হয়ে কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছেন তিনি।
তা ছাড়া স্পেনের জাতীয় দলেরও নিয়মিত মুখ তিনি। গত বছর জাতীয় দলের হয়ে জিতেছেন ইউরো কাপ।
ট্রান্সফার মার্কেটর তথ্য অনুযায়ী, বার্সার হয়ে এ পর্যন্ত ১০০ ম্যাচে ২২ গোল করার পাশাপাশি ৩৩টি গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন ইয়ামাল।
বার্সার ১২৫ বছরের ইতিহাসেই সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত ৯ ম্যাচ খেলে ১ গোল করেছিলেন এই আর্জেন্টাইন তারকা।
একই বয়স পর্যন্ত আরেক কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ১৯ ম্যাচে ৫ গোল করার পাশাপাশি ৪ গোলে সহায়তা করেছেন।
ফুটবল ইতিহাসের পাতার দিকে তাকালে দেখা যায়, মাঠের দু’জন কিংবদন্তি হলেন প্রয়াত ইয়োহান ক্রুইফ ও ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
ডাচ কিংবদন্তি ক্রুইফ আয়াক্সের হয়ে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত ১০ ম্যাচ খেলেছিলেন। এ সময় ৪ গোল করার পাশাপাশি গোলে অ্যাসিস্ট করেছিলেন দুটি। ‘৮৬’ বিশ্বকাপে কিংবদন্তি ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে একই বয়স পর্যন্ত ৬০ ম্যাচ খেলে ২১ গোল করার পাশাপাশি ১৫ গোলে সহায়তা করেছিলেন।
গোল করা ও করানো বিচারে ম্যারাডোনাই ইয়ামালের সবচেয়ে কাছাকাছি। তবে শিরোপা জয় বিচারে ইয়ামালের ধারেকাছে কেউ নেই।
বিশ্ব ফুটবলের আরেক কিংবদন্তি প্রয়াত পেলে। ১৯৫৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সান্তোসের মূল দলে ১৫ বছর বয়সে অভিষেক হয়েছিল এই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির।
ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সে বছর একটি ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন পেলে। যেখানে একটি গোলও করেন তিনি।
পরের বছর সান্তোসের একাদশে নিয়মিত হন পেলে। ১৬ বছর বয়সী পেলে ১৯৫৭ সালের সে মৌসুমে ৩৮ ম্যাচে ৪১ গোল করেছিলেন। ইয়ামালের ১০০ ম্যাচে ২২ গোলের চেয়ে পেলে ওই বয়সে গোল করায় এগিয়ে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ইয়ামাল এরই মধ্যে অসাধারণ এক উচ্চতায় পৌঁছেছেন। অনেকে তার খেলায় লিওনেল মেসির ছায়া দেখছেন।
ইন্টার মিলানের বিপক্ষে তার গোলের পর বিশ্লেষক জেমি ক্যারাঘার বলেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন মেসিকে দেখছি। বল যখন তার পায়ে, তখন খেলার গতি থেমে যায়, সবাই অপেক্ষা করে সে কী করে।’