ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনা এবং শীর্ষ সামরিক ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে ব্যাপক আকারে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির দাবি, এই অভিযানের এখনও ‘অনেক অর্জন বাকি আছে’। এ হামলার জবাবে ইরানও পাল্টা ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এএফপির বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রায় ২০০টি যুদ্ধবিমান ইরানের অন্তত ১০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে তেহরান, এর আশপাশের এলাকা ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জ।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র এফি ডেফরিন এক সরাসরি ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ইরানের ভেতরে ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত ৩৩০টির বেশি ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
ডেফরিন জানান, ‘এই হামলা ছিল অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট ও সমন্বিত একটি অভিযান। আমরা অসংখ্য সামরিক স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছি, যার মধ্যে ছিল বিভিন্ন পরমাণু স্থাপনাও।
ইরানের সরকারি টেলিভিশন জানিয়েছে, ইসফাহান প্রদেশে অবস্থিত নাতাঞ্জ পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র একাধিকবার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে গবেষণা কেন্দ্র থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।
তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, হামলার পরও নাতাঞ্জে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে সংস্থাটি জানায়, ইরান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে নাতাঞ্জ অঞ্চলে নজরদারি চলছে। এখনও পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিপর্যয় ঘটেনি।
আইএইএ আরও নিশ্চিত করেছে, ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী বুশেহারে অবস্থিত একমাত্র পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা হয়নি।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, এই হামলায় বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর প্রধান হোসেইন সালামি, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং অন্তত দুইজন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
এছাড়া আবাসিক এলাকাগুলোতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি টিভি। এসব হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন জানিয়েছেন, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান প্রায় ১০০টি ড্রোন ইসরায়েলের দিকে পাঠিয়েছে। তবে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলো প্রতিহত করতে কাজ করছে বলে দাবি করেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। জর্ডান ইতোমধ্যে নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায় তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে।