বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচে বিতর্কে জড়িয়েছেন রেফারি। খেলার শেষদিকে তার এক সিদ্ধান্তে এই বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। বলা হচ্ছে, ওই সময়ে তার কাছ থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত এলে পাল্টে যেতে পারত ম্যাচেরই চিত্র। ঘুরে দাঁড়াতে পারত বাংলাদেশ। ফলেও আসতে পারত পরিবর্তন। কিন্তু ওই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণেই সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল।
ফলে ম্যাচের ফল ছাপিয়ে এখন সমালোচনার কেন্দ্রে সেই রেফারি। সবার প্রশ্ন- কে এই রেফারি?
গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের রেফারির দায়িত্বে ছিলেন ক্লিফোর্ড ডেপুইয়াত। তার বাড়ি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনে।
আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ফিফার তথ্য অনুযায়ী, ক্লিফোর্ড ডেপুইয়াত ২০১৪ সাল থেকে সংস্থাটির লিস্টেড রেফারি।
রেফারি ক্লিফোর্ড কেমন অভিজ্ঞ?
তিনি ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের একটি ম্যাচেরও রেফারির দায়িত্বে ছিলেন। সেটি ছিল ২০১৯ সালে কম্বোডিয়া ও ইরাকের মধ্যকার ম্যাচ।
তা ছাড়া ২০২১ সালের এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতাও আছে ক্লিফোর্ডের।
গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ক্লিফোর্ড মাত্র ২০ বছর বয়সে রেফারিংয়ের যাত্রা শুরু করেছিলেন।
তিনি ফিলিপাইন ফুটবল ফেডারেশনের (পিএফএফ) রেফারিস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম থেকে উঠে এসেছেন।

ফিলিপাইনের চার রেফারিদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্লিফোর্ড ডেপুইয়াত। অথচ তারই এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সমালোচনার কেন্দ্রে এখন।
তার ওই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) কাছে অভিযোগ জানানোর কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্য আমের খানও।
যেভাবে বিতর্কে জড়ালেন ক্লিফোর্ড
বাংলাদেশ দল যখন সমতা ফেরাতে মরিয়া, তখনই সৃষ্টি হয় এই বিতর্কের। খেলার ৯৩ মিনিটের সময় বল নিয়ে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম সিঙ্গাপুরের মিডফিল্ডার ইরফান নাজিবকে কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বল নিয়ন্ত্রণে রেখে বক্সেও ঢুকে পড়েন এই বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড।
কিন্তু তাকে পেছন থেকে ল্যাং মেরে বসেন নাজিব। ভিডিওতে তা ধরা পড়লেও রেফারির চোখে পড়েনি। বাংলাদেশের ফুটবলাররা তাই পেনাল্টির আবেদন জানিয়েও কোনো সুফল পাননি। বাংলাদেশ দল তাৎক্ষণিক পেনাল্টির আবেদন জানালেও রেফারি তা নাকচ করে দেন।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে রেফারির বিতর্কিত সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ বাংলাদেশ দল ও ফুটবলপ্রেমীদের। খেলা শেষে দর্শকরা যখন বের হচ্ছেন তখন গণমাধ্যমকে জানান তাদের এই আক্ষেপের কথা।
ভক্ত-কোচ সবার আঙুল ক্লিফোর্ডের দিকে
দর্শকরা জানান, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যেকার খেলায় ম্যাচ রেফারি সিঙ্গাপুরের পক্ষপাতিত্য করেছেন। তার একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশ হন বলেও জানান সমর্থকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সমর্থক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সিঙ্গাপুর দল খেলছে ১২ জন নিয়ে, সে ম্যাচ রেফারি ক্লিফোর্ড ডেপুইয়াতকেও সিঙ্গাপুর দলের সদস্য হিসেবে যোগ করেন।
রেফারির এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচ শেষে মুখ খোলেন বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। হারের পর সংবাদ সম্মেলনে পেনাল্টি না পেয়ে কাবরেরা বলেন, আমার কাছে মনে হয় এটা পরিষ্কার পেনাল্টি ছিল।
‘ওই সময়ে আমরা যেভাবে খেলছিলাম, পুরোদমে আক্রমণ করছিলাম; আমি যদি ভুল না ভেবে থাকি, ২-২ হতে পারত ওই সিদ্ধান্ত পক্ষে এলে। পেনাল্টি পেলে খুশি হতাম।’
বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্য আমের খান জানিয়েছেন, ক্লিফোর্ড ডেপুইয়াতের বিরুদ্ধে বাফুফের পক্ষ থেকে এএফসি’র কাছে অভিযোগ জানানো হবে।