নীল নদের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইথিওপিয়া, মিশর ও সুদানের চলমানা আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদ বলেছেন, আফ্রিকার বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ বাঁধ (জিইআরডি) শুধু ইথিওপিয়ার অর্থনীতিতেই নয়, বরং গোটা অঞ্চলের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
গত মঙ্গলবার আল আরাবিয়া টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসান শেখ মোহাম্মদ জানান, সোমালিয়া একটি শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমি নিশ্চিত করেছি যে সোমালিয়া ইথিওপিয়া, মিশর এবং সুদানকে পারস্পরিক বোঝাপড়ার দিকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।’
প্রেসিডেন্ট আরও জানান, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ নীল নদের পানিবণ্টন নিয়ে উদ্বিগ্ন যেকোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী। তবে মিশর ও সুদানের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও সোমালিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান ভারসাম্যপূর্ণ থাকবে বলে তিনি স্পষ্ট করেন।
তার ভাষায়, ‘ইথিওপিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কখনো কায়রোর সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের জন্য হুমকি নয়। সোমালিরা নিজেদের সঙ্গে এবং বিশ্বের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করে।’
প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে জিইআরডি, যা থেকে ৫ দশমিক ১৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। নীল নদের তীরে ২০১১ সাল থেকে নির্মিত এই বাঁধ স্থলবেষ্টিত ইথিওপিয়ার জন্য জ্বালানি ঘাটতি মোকাবিলায় এক রূপান্তরকারী প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
যদিও আদ্দিস আবাবা এই প্রকল্পকে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুবিধার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরছে, কায়রো ও খার্তুম উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। মিশরের প্রায় ৯৭ শতাংশ স্বাদু পানি আসে নীল নদ থেকে, ফলে উজানের পানি আটকে রাখা হলে কৃষি ও পানি নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছে তারা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন