ঢাকা শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

প্রথম এভারেস্টজয়ী দলের শেষ জীবিত সদস্যের মৃত্যু

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১২:১৯ পিএম
কাঞ্চা শেরপা। ছবি- সংগৃহীত

নেপালের কিংবদন্তি পর্বতারোহী কাঞ্চা শেরপা মারা গেছেন। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট জয়ী প্রথম অভিযাত্রী দলের শেষ জীবিত সদস্য ছিলেন তিনি । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডুর কাপান এলাকায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন কাঞ্চা শেরপা। সংস্থার সভাপতি ফুর গেলজে শেরপা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে শোকাহত। কাঞ্চা শেরপা ছিলেন এক ঐতিহাসিক ও কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব। তার মৃত্যু আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।’


১৯৫৩ সালে স্যার এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে যখন প্রথমবারের মতো ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার (২৯,০৩২ ফুট) উঁচু এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান, তখন কাঞ্চা শেরপা ছিলেন তাদের পোর্টার বা সহায়ক দলের একজন। তিনিই ছিলেন সেই তিন শেরপার একজন, যারা হিলারি ও তেনজিংয়ের সঙ্গে ৮ হাজার মিটার উঁচুতে থাকা শেষ ক্যাম্প পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন।

১৯৩৩ সালে এভারেস্টের পাদদেশে নামচে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাঞ্চা শেরপা। সে সময় শেরপা জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ করতেন।

কাঞ্চা তরুণ বয়সে তিব্বতে আলু বেচে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরে বন্ধুদের সঙ্গে দার্জিলিং গেলে তাকে পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণ নিতে উৎসাহিত করা হয়।  ১৯৫৩ সালের ঐতিহাসিক অভিযানের পর আরও দুই দশক তিনি হিমালয়ে কাজ চালিয়ে যান।
 বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও কান্ছা শেরপা উদ্বিগ্ন ছিলেন এভারেস্টের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। তিনি ২০২৪ সালে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘পাহাড় এখন অতিরিক্ত ভিড়ে নষ্ট হচ্ছে। মানুষ দেবতাস্বরূপ এই পর্বতে ধূমপান করে, মাংস খায়, আবর্জনা ফেলে। এটা অসম্মান।’

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি মৌসুমে ৬০০-র বেশি মানুষ এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করেন, ফলে পাহাড়ে ভিড় ও দূষণ ভয়াবহ আকার নিয়েছে।কাঞ্চা শেরপা তখন বলেছিলেন, ‘কোমোলাঙ্গামা (এভারেস্ট) আমাদের কাছে দেবী মায়ের মতো। তাই এর প্রতি সম্মান থাকা উচিত। পাহাড়ে আরোহণের সংখ্যা কমানোই ভালো হবে।’