মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রত্যাশা, তার নেতৃত্বে সৌদি আরব দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। ট্রাম্প মনে করেন, সৌদি আরব আব্রাহাম চুক্তিতে যুক্ত হলে অন্যান্য মুসলিম দেশও একই পথে হাঁটবে।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার আশা সৌদি চুক্তি করবে। আমার আশা অন্যরাও করবে। আমি মনে করি, যখন সৌদি আরব আব্রাহাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে, তখন সবাই করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে তার ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং তারা শিগগিরই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।’
২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান- এই চারটি মুসলিম দেশ প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের আরব ঐক্যের রাজনৈতিক অবস্থানে বড় পরিবর্তন আসে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছি। এখন সময় এসেছে এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করার।’
তিনি ইঙ্গিত দেন, সৌদি আরবের মতো প্রভাবশালী দেশ এই চুক্তিতে যুক্ত হলে ইরানসহ আরও কয়েকটি দেশকে আলোচনায় আনা সম্ভব হবে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি ইরান ও ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন। তার মতে, শান্তির জন্য সবাইকে টেবিলে আসতে হবে। আমরা চাই মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী স্থিতিশীলতা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের প্রাক্কালে মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে তার অবস্থান স্পষ্ট করছে। ওয়াশিংটনের প্রভাব ফিরিয়ে আনতে এবং ইসরায়েল-আরব সম্পর্ককে আরও গভীর করতে তিনি আব্রাহাম চুক্তিকে তার বড় কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে দেখছেন।
চলমান গাজা যুদ্ধ এবং ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্কের সম্ভাবনা এখনো দূরের বিষয় হলেও ট্রাম্পের মন্তব্যে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে- মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কি নতুন ভারসাম্য তৈরি হতে যাচ্ছে?