ঢাকা শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ইসরায়েল ইরানের হৃদপিণ্ডে আঘাত হানলো

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ০২:২০ পিএম
ইসরায়েলের হামলায় তেহরানের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন। ছবি- সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বড় ধরনের বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পারমাণবিক কেন্দ্র, ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কারখানা ও সামরিক ঘাঁটিগুলো ছিল এই হামলার মূল লক্ষ্য। দেশটির রাজধানী তেহরান ও ইসফাহান প্রদেশে বিস্ফোরণ ও ক্ষয়ক্ষতির খবর নিশ্চিত করেছে ইরানি গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসফাহানে অবস্থিত নাতানজ পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে।

তবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, হামলার পরেও ওই স্থানে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বৃদ্ধি পায়নি। সংস্থাটি ইরান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

রাজধানী তেহরানে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সদর দপ্তরে চালানো হামলায় সংস্থার প্রধান কমান্ডার হোসেন সালামি নিহত হয়েছেন বলে ইরানি রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরান বলছে, এই হামলায় কয়েকজন শিশু নিহত হয়েছে এবং বহু বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরানের সামরিক ও পরমাণু সক্ষমতা দুর্বল করাই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, 'এই অভিযান এখনও শেষ হয়নি, আরও অনেক অর্জন বাকি।'

ইরান এই হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। তেহরান বলেছে, এই বর্বরোচিত হামলার যথাযথ জবাব দেবে তারা। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আত্মরক্ষার অংশ হিসেবেই দেশটি পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ অব্যাহত রাখবে।

ইরান ও এর আশপাশের দেশগুলো সম্ভাব্য পরবর্তী হামলার শঙ্কায় আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। আকাশপথে বিমান চলাচল আংশিকভাবে স্থগিত রয়েছে।

এদিকে, হামলার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট ও এশিয়ার প্রধান শেয়ারবাজারগুলোতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বেড়ে গেছে।

হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে আলাদা করে বলেছে, এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা চায় না মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ুক।

তবে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের অবস্থান অনুযায়ী, তারা চায় ইরান পুরোপুরি পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ কার্যক্রম বন্ধ করুক।