শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ১১:০০ এএম

জি এম কাদেরকে বাদ দিয়েই গঠিত হচ্ছে জাপা!

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ১১:০০ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জাতীয় পার্টির (জাপা) অন্তর্কোন্দল এখন প্রকাশ্যে। দলের নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি জাপার দুটি পক্ষ। একদিকে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে পার্টির তরুণ নেতৃত্ব, অন্যদিকে বিগত সময়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে মন্ত্রী-এমপি হওয়া নেতাদের নেতৃত্বে একটি অংশ। জি এম কাদেরের অংশ চাইছে নতুন নেতৃত্বে নতুন জাপা। অন্যরা চাইছে কাউন্সিলের মাধ্যমে জি এম কাদেরকে বাদ দিয়েই গঠিত হবে জাপা। যে লক্ষ্যে বিগত দিনের জাপার বহিষ্কৃতরা একত্র হয়ে নতুনভাবে জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে।

জাপার মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, ৭৮ ইউনিটের ৬৫টির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে জি এম কাদেরের ওপর। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে নতুন চেয়ারম্যান। এদিকে মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) জানান, দলকে ভাঙনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন চেয়ারম্যান নিজেই তার কার্যক্রমের মাধ্যমে।

জাপার নেতৃত্ব নিয়ে ফের দেখা দিয়েছে নতুন অস্থিরতা। অন্যপক্ষের নেতৃত্বের অভিলাষ টের পেয়ে ডাকা কাউন্সিল স্থগিত করেন জি এম কাদের। এমনকি সর্বশেষ গত সোমবার বিরোধীপক্ষের মহাসচিবসহ তিন জ্যেষ্ঠ নেতাকে দল থেকে তিনি বহিষ্কার করেন এবং নতুন মহাসচিব নিয়োগ দেন। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বহিষ্কৃতদের নেতৃত্বে জাপার একটি অংশ।

মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, গণতান্ত্রিক পার্টির দায়িত্ব হস্তান্তর কখনো রাতের আঁধারে হয় না। আর সেটাই করেছেন জি এম কাদের। আমাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার যে প্রেসিডিয়াম সভার কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ। তিনি বলেন, আমরা কাউন্সিলের জন্য অপেক্ষা করব, সেটি অনুষ্ঠিত হবে সেখানে আমরা অংশগ্রহণ করে অন্যান্য কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করব। কারণ, সমর্থক হিসেবে আমরা সেখানে তো যেতেই পারি। যদিও আমাদের একটা বিকল্প পরিকল্পনা আছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব। কিন্তু দল ভাঙার দায়িত্ব আমরা নিব না। দল ভাঙার দায়িত্ব চেয়ারম্যান নিজে নিচ্ছেন। আমরা দলের বিরুদ্ধে এমন কিছুই করিনি যার ফলে দল ভাঙবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বলা হয়েছে, আমরা পার্টি ভাঙার চেষ্টা করেছি, কী করেছি আমরা সেটি বলা হয়নি। আমরা পার্টির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন, আর্থিক স্বচ্ছতা ও ঐক্যবদ্ধতার কথা বলেছি।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দলের নেতৃত্ব নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিলেও আমরা নতুন অংশ হবো না। তবে, জাতীয় পার্টির (জাপা) বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের জ্যেষ্ঠ তিন নেতাকে দলীয় সব পদ-পদবি থেকে যে প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ বেআইনি, আইনগতভাবে এটার কোনো বোধ্যতা নেই। সুতরাং, আমরা এখনো জাতীয় পার্টির অংশ এবং আমরা অন্য কোনো জাতীয় পার্টি করছি না। বরং যারা দল থেকে চলে গেছেন ইতিপূর্বে তাদের সবাইকে নিয়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট মিটিংয়ের যে অভিযোগ আমাদের ওপর আনা হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের জানানোই হয়নি। গত ২৮ জুনের পর আমাদের সাথে কোনো আলোচনা হয়নি। এ ছাড়া সম্মেলন তারিখ ঘোঘণা হবার পর ৪ থেকে ৫ জন নতুন নিয়োগ করা হয়েছে যা করার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে কোনো পূর্ব আলোচনা ছাড়াই দশম জাতীয় সম্মেলন স্থগিত করেন। কারণ, সেখানে তার চেয়ারম্যান পদ হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যা কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলে স্পষ্ট হতো। কাউন্সিলে যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে নতুন আগামী দিনের জাপার নতুন চেয়ারম্যান।

চেয়ারম্যান পদ হারানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা জি এম কাদের এর পাশে রয়েছেন। আমরা গত ২৫ জুন একটি মিটিং করি যেখানে ৭৮টি ইউনিটের ৬৫টির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হাজির হয়ে চেয়ারম্যানকে পূর্ণ সমার্থন প্রদান করেন। দলীয় কাউন্সিল হলেও এই ইউনিটের নেতাকর্মীরাই উপস্থিত হবেন সুতরাং যেকোনো পরিস্থিতিতে জি এম কাদের শতভাগ সমর্থন পাবেন বলে বিশ্বাস করি। সুতরাং চেয়ারম্যান পদ হারানোর ভয়ে কাউন্সিল পিছিয়ে দিয়েছে এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, নতুন করে জাতীয় পার্টি ভাঙনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে যতবার এমনটা হয়েছে আবার তারা একটি দলে পরিণত হয়েছে। নতুন দল গঠনের অধিকার সবারই আছে। যদিও এই ভাঙন কারোই কাম্য নয়।

জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, বিগত দিনেও কিছু সিনিয়র নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির সাথে বেঈমানি করেছিল। এ কারণেই, জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মী সব সময় জাতীয় পার্টির সাথেই ছিল। তৃণমূল নেতাকর্মী কখনোই জাতীয় পার্টির মূল স্রোতের বাইরে যায়নি। গত ২৫ জুন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রকাশ করেছেন। সেই দিনই জাতীয় পার্টির আগামী দিনের পথচলার ফয়সালা হয়ে গেছে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যম গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করেন। কারণ, ২০২১ সালে তিনি যে বক্তৃতা করেছেন তা ২০২৪ সালে প্রতিফলিত হয়েছে। এখন যা বলছেন, তা আগামী দিনেও সঠিক প্রমাণিত হবে।

গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর নবনিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে সংবর্ধনা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের একজন সৎ ব্যক্তি। ৫ বছর গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কেউ দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারকে তিনি কর্তৃত্ববাদী সরকার বলতেন। আওয়ামী লীগ বারবার চেষ্টা করেও জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা করতে পারেনি। বাংলাদেশের সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৯ বছর রাষ্ট্রপতি ছিলেন, সেনাপ্রধান ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বর্জন করেছিলেন। মন্ত্রী থেকেও বেশির ভাগ জাতীয় পার্টির ৯০ ভাগ প্রার্থীদের নিয়ে সেই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তখন সরকার জি এম কাদের’কে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইচ্ছা করলে ২-৪ জনকে মন্ত্রী বানাতে পারতেন তিনি। কিন্তু ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে ৫টি বছর সংসদের বাইরে থেকে দেশ ও মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন তিনি। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টি মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় যাব। প্রত্যেকটি ইউনিটে বর্ধিত সভা করা হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!