এক রাতেই কবরস্থান থেকে ৭ কঙ্কাল চুরি, আতঙ্কে এলাকাবাসী

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের নগর কয়ড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে এক নারীসহ সাতজনের কঙ্কাল চুরি হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা কবর খুঁড়ে এসব কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়ড়া ইউনিয়নের নগর কয়ড়া, কয়ড়া কৃষ্টপুর ও কয়ড়া চরপাড়াসহ তিনটি গ্রামের একটি কবরস্থান রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে নগর কয়ড়া গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে গেলে বেশ কয়েকটি কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি গ্রামের লোকজনকে জানালে তারা কবরস্থানে এসে দেখতে পান ৭টি কবর খোঁড়া। কবরের মাটিগুলো এলোমেলোভাবে ছড়ানো। পরে তারা দেখেন, কবরে কোনো মৃতদেহের কঙ্কাল নেই।

চুরি যাওয়া মৃতদেহের কঙ্কালগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ কয়ড়া কৃষ্টপুর গ্রামের হারুন আর রশিদ, মোসলেম ম-ল, রুবেল হোসেন এবং কয়ড়া চরপাড়া গ্রামের মনু সরকার, ছানোয়ার শেখ, রহমত সরকার ও রুবি খাতুন। কঙ্কাল চুরির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

কঙ্কাল চুরি যাওয়া হারুন আর রশিদের ছেলে লিটন হোসেন বলেন, যেসব মানুষের কঙ্কাল চুরি হয়েছে এগুলো সবই দুই থেকে তিন বছর আগে কবরস্থ করা। প্রতিটি কবরেই বাঁশের বেড়া দেওয়া ছিল। দুর্বৃত্তরা বেড়াগুলো সরিয়ে রাতের অন্ধকারে কবর খুঁড়ে সারিবদ্ধ ৭টি কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে। এভাবে তার বাবার মরদেহের কঙ্কাল চুরি হয়ে যাওয়ায় তারা যেমন কষ্ট পেয়েছেন, তেমনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। একই কথা বলেন রুবি খাতুনের ছেলে পিন্টুসহ অপর চুরি যাওয়া মৃতের স্বজনেরা।

কবরস্থান কমিটির সহ-সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আফজাল প্রামাণিক জানান, কঙ্কাল চুরি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা এর আগে তাদের এলাকায় ঘটেনি। এই ঘটনায় তাদের এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়েছে। তারা এখন কবরস্থানে রাতের বেলায় পাহারার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। বিষয়টি উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, নগর কয়ড়া কবরস্থানে কঙ্কাল চুরির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কবরস্থান পরিচালনা কমিটি বা কঙ্কাল চুরি হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনেরা অভিযোগ করলে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে রাতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যাতে লোকজন কবরস্থান পাহারার ব্যবস্থা নেয়, সে ব্যাপারে থানা থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।