তুবা প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার পথে বাড়ির সামনের রাস্তায় একটি কুকুর দেখতে পায়। একদম চুপচাপ আনমরা হয়ে বসে থাকে। এমন বেশ কয়েক দিন, সে এই পথ দিয়ে যায়। যে দিন স্কুল বন্ধ ছিল, সে দিনও তুবা যায় কুকুরকে দেখতে; সঙ্গে একটি রুটি নিয়ে সে ভেবেছিল, কুকুরটির খিদে পেয়েছে। তুবা দূর থেকে কুকুরটির কাছে রুটি ছুড়ে মারে। অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বলে- খাও খাও। কুকুরটি খায় না, আনমোনা হয়ে একটি গাছের কাছে বসে থাকে। মাঝে মাঝে ঘেউ ঘেউ করে। কিছুক্ষণ পর তুবা চলে আসে। দূর থেকে খেয়াল করে কুকুরটি রুটি খাচ্ছে। এরপর প্রায় প্রতিদিন তুবা কিছু না কিছু দিয়ে আসে কুকুরটিকে।
একদিন তুবার মা লক্ষ করে, তুবা খাবার নিয়ে বাইরে যাচ্ছে। মা তার পিছে পিছে যায়; লক্ষ্য করে দেখে তুবা কুকুরটির দিকে খাবার ছুড়ে মারছে আর কী জানি বলছে। তুবার মা তুবাকে ডাক দেয়। তুবা ফিরে আসে। তুবার মা তুবাকে রাতে খাওয়ার সময় বলে কুকুরের কাছে যেতে নেই, তারা কামড় দেয়। তুবা বলে, মা ও খুব ভালো; কিন্তু মন কেন জানি খুব খারাপ, কোনো কিছু বলে না। তুবার মা তুবাকে নিয়ে পরের দিন কুকুরটি দেখতে যায়। খুঁজে পায় না। তুবা ডগি বলে ডাক দিলে সামনে আসে গাছের ওপার থেকে।
কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে। তুবা বলে- মা, ও মনে হয় খাবে। তুবার মা বলে, ও কাউকে খুঁজছে। হয়তো পথ হারিয়ে গেছে। তুবা বলে, তাহলে তার বাড়িতে রেখে আসি চলো। তুবার মা বলে, তার বাড়ি তো চিনি না মা। তুবা বলে, তাহলে ছবি তোলো, অনলাইনে দাও। কেউ খুঁজতে পারে। তুবার মা ডগির ছবি তোলে। ছবিটি ফেসবুকে দিয়ে দেয়। একদিন পর একজন ফেসবুকে নক দেয়, কুকুরটি তার। ব্যক্তিটি তুবাদের বাড়ি থেকে কিছুদূরে থাকে।
কুকুরটি রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিল। লোকটি তুবাদের বাড়ির সামনে আসে। তুবা ও তুবার বাবা আর লোকটি কুকুরটি খুঁজতে ওই গাছের কাছে যায়। তুবা ডগি বলে ডাক দেয় আর লোক বিঙ্গো বলে ডাক দেয়। দৌড়াতে দৌড়াতে ডগি কাছে আসে; সামনে দেখে তুবা ও তাকে পোষা সেই লোকটি, ডগি এখন কার কাছে যাবে; তুবার কাছে নাকি লোকটির কাছে?
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন