আগামী ৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে হবে এশিয়া কাপ ২০২৫। এবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হচ্ছে টুর্নামেন্টটি। কেননা সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে। এশিয়া কাপের ১৭তম আসর সামনে রেখে ঘরের মাঠে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল। এশিয়া কাপের প্রস্তুতিমূলক এই সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে লিটন কুমার দাসরা। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত হয়। তবে প্রথম দুই ম্যাচে দাপুটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে তারা। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকেরা।
ডাচদের বিপক্ষে সিরিজ জয় এবং এর আগে দীর্ঘ অনুশীলন ক্যাম্পে নিজেদের প্রস্তুত করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে অনুশীলন ক্যাম্পে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের অধীনে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন। আর সেটির প্রতিফলন দেখা গেছে নেদারল্যান্ডস সিরিজেও। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালোভাবে প্রস্তুত এখন ব্যাটসম্যানরা। বোলাররাও আশাজাগানিয়া পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন। সব মিলিয়ে এশিয়া কাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানালেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক লিটন। নেদারল্যান্ডস সিরিজ শেষে এই উইকেটরক্ষক ও ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আমরা এশিয়া কাপে যাওয়ার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত। আমি আগেও বলেছি, আমরা যে ক্যাম্পটা করেছিÑ শুধু এই সিরিজের জন্য নয়, সামনে যতগুলো খেলা থাকবে, তার জন্য আমরা প্রস্তুত। এত ভালো ক্যাম্পিং আমি আগে কখনো দেখিনি। যে টাইপের ক্রিকেট আমরা খেলতে চাইছি, যে টাইপের প্র্যাকটিস আমরা করতে চাইছি, সেটি সিলেটেই একমাত্র পাওয়া গেছে। তাই আমার কাছে মনে হয়, সব মিলিয়ে আমাদের জার্নিটা ভালো ছিল।’
দলীয় অধিনায়ক পারফরম্যান্স করলে অন্যদের মনোবল বেড়ে যায়। টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন দারুণ ছন্দে আছেন। ১৪৫ রান করে সিরিজ-সেরা হয়েছেন। এশিয়া কাপেও নিজেকে উজাড় করে দিতে চাইবেন তিনি। লিটন বলেন, ‘আমি (অধিনায়কত্ব) উপভোগ করি, উপভোগ করি বলেই এই দায়িত্ব নিয়েছি। অবশ্যই আমাদের টানা বেশ কয়েকটি সিরিজে ভালো ক্রিকেট হয়েছে। আমি নিজেও পারফর্ম করছি, যা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একজন নেতা যখন পারফর্ম করতে পারেন না, তখন দল মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়ে।’ নেদারল্যান্ডস সিরিজে রান পাওয়ায় নিজেও সন্তুষ্ট লিটন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সবাই ভালো পারফর্ম করছে, আর আমারও একটি চ্যালেঞ্জ ছিলÑ আমিও যেন সেই অবদান রাখতে পারি, যেন ভালো পারফর্ম করতে পারি। সেদিক থেকে আমি ভীষণ আনন্দিত যে আমি দলের একজন সদস্য হিসেবে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারছি।’ অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর টানা তিন সিরিজে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন লিটন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোর মধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রাম তুলনামূলকভাবে বেশ ব্যাটিং-বান্ধব ভেন্যু। আউটফিল্ডও এখানে খুব ভালো। অন্যদিকে, মিরপুরে সবাইকেই কিছুটা সংগ্রাম করতে হয়, শুধু আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়রা নয়, বিদেশি খেলোয়াড়রাও এখানে খেলতে এসে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই সব ব্যাটসম্যানের জন্য সিলেট একটি ভালো বিকল্প, দারুণ একটি মাঠ। এখানে খেলা সত্যিই উপভোগ্য। আপনারা যারা এখানে থাকেন, তারাও পরিবেশ দেখে নিশ্চয়ই আনন্দ পান।’
এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও হংকং। গ্রুপ পর্বে আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচটি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তবে আত্মবিশ^াসী লিটন বলেন, ‘আফগানিস্তানের সঙ্গে আমরা অনেকগুলো সিরিজ খেলেছি নিকট অতীতে। দুই-একজন প্লেয়ার হয়তো খেলেনি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্রিকেটারই তাদের বোলারদের খেলতে অভ্যস্ত। কিছুদিন আগেও সিলেটে কিন্তু আফগানিস্তান টিম এসেছিল, খেলেছে।’ প্রতিপক্ষের শক্তির জায়গা সম্পর্কে টাইগাররা ভালো ধারণা রাখে বলেও দাবি লিটনের, ‘আমার কাছে মনে হয়, আমাদের প্লেয়ার সবাই জানি যে তাদের শক্তির জায়গা বা দুর্বলতা কোনটা। তাই আমরা চেষ্টা করব তাদের সেভাবে মোকাবিলা করার জন্য।’ সাধারণত স্পিন বোলিং আক্রমণ দিয়েই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টায় থাকে আফগানরা। লিটন বলেন, ‘এমন না যে শুধু তারা স্পিন দিয়ে আমাদের ধরবে, আমাদের হাতেও অপশন আছে। আমাদের ব্যাটসম্যান আছে, আমাদের পেস বোলিং অ্যাটাক আছে। আমরাও দেখি কী করা যায়।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন