শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম

এক মাসে ১০০ জেলে নিখোঁজ, কী চলছে নাফ নদীতে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম

নাফ নদীতে জেলেরা। ছবি- সংগৃহীত

নাফ নদীতে জেলেরা। ছবি- সংগৃহীত

মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা চরমে পৌঁছেছে। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তে বর্তমানে তৎপর বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর উপকূলে বাংলাদেশের জেলেরা পড়েছেন মারাত্মক বিপদের মুখে। গত এক মাসেই প্রায় ১০০ জন জেলে নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, আরাকান আর্মি নাফ নদীতে স্পিডবোটে টহল দিয়ে বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণ করে মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করছে তারা। গত ২৬ আগস্ট টেকনাফের নাইখংদিয়া এলাকা থেকে ১১ জন জেলেকে দুটি ট্রলারসহ ধরে নিয়ে গেছে তারা। শুধু আগস্ট মাসেই আরাকান আর্মি ৬৩ জন জেলে ও ১০টি ট্রলার অপহরণ করেছে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ।

এদিকে সীমান্তে এই ধরনের তৎপরতা ঠেকাতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) টহল জোরদার করেছে। ২৯ আগস্ট কোস্টগার্ড ১৯টি ট্রলারসহ ১২২ জন জেলেকে ফেরত এনেছে, যাদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশি ও ৯৩ জন রোহিঙ্গা ছিল।

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে কোস্টগার্ডের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, ‘রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে আরাকান আর্মি এখন পুরো সীমান্তে সক্রিয়। শূন্যরেখা অতিক্রম করলেই জেলেরা ঝুঁকিতে পড়ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে গিয়ে কোস্টগার্ড ও বিজিবিকে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, এতে করে আরাও আতঙ্কিত।’

এদিকে সীমান্তে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের আশঙ্কাও বাড়ছে। গত ২৭ আগস্ট টেকনাফের খরের দ্বীপ এলাকায় বিজিবির অভিযানে উদ্ধার করা হয় দুটি জি-৩ রাইফেল, একটি এমএ-১ রাইফেল, একটি এলএম-১৬ রাইফেল ও ৫০৭ রাউন্ড গুলি। একইভাবে ১১ আগস্ট এক তরুণ একে-৪৭ রাইফেলসহ আত্মসমর্পণ করে, যাকে আরাকান আর্মির সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশও সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তে বাংলাদেশের প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে দল বেঁধে প্রবেশে তারা ব্যর্থ হলেও বিচ্ছিন্নভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।

স্থানীয়রা আরও জানা, ‘আরাকান আর্মি একদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে তাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে সহায়তা করছে। এ অবস্থায় সীমান্তের সাধারণ মানুষ ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কেননা সীমান্তের ওপারে প্রায় প্রতিদিনই গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। কখনো কখনো তা বাংলাদেশের ভেতরেও চলে আসে। আমরা আতঙ্কে থাকি।’

এ পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করে কক্সবাজার বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে দেওয়া হবে না। সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছি।’

সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা, আইস (ক্রিস্টাল মেথ) ও অন্যান্য মাদকদ্রব্যের প্রবাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। বিজিবির তথ্যমতে, গত এক বছরে সীমান্ত এলাকা থেকে ১,৩২১ কোটি টাকার মাদক জব্দ করা হয়েছে।

বিজিবি জানায়, ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের মধ্যে ৮৪ কিলোমিটার শুধু নাফ নদীর জলসীমা হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকার এখন সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো এবং আরাকান আর্মির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বজায় রেখে সংকট মোকাবিলার কৌশল নিচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

Link copied!