*** ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষের চিকিৎসাসেবায় ৬ জন চিকিৎসক
*** ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও গত ১৪ বছরে মিলেনি কাক্সিক্ষত চিকিৎসক নিয়োগ
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চরমে পৌঁছেছে। প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষের জন্য ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ২০১০ সালে হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও গত ১৪ বছরে কাক্সিক্ষত চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এখানে মোট ৩২টি চিকিৎসক পদ অনুমোদিত থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও), একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও চারজন মেডিকেল অফিসার। বিশাল জনসংখ্যার তুলনায় এ সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, নিয়মানুযায়ী বহির্বিভাগ সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও বেলা ১টার পর ডাক্তার মেলে না। ভর্তি রোগীরাও নিয়মিত সেবা পান না। হাসপাতালের ওষুধ সরবরাহ সীমিত, বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটরও চালু থাকে না।
ডিমলা সদর এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘এত বড় এলাকার জন্য যদি মাত্র কয়েকজন ডাক্তার থাকেন, তাহলে আমরা যাব কোথায়? চিকিৎসা নিতে এসে শুধু হয়রানি আর অবহেলা পাচ্ছি।’
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ডিমলা হাসপাতালে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া যায়। একটু গুরুতর হলে রংপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের যদি পর্যাপ্ত টাকা থাকত, সরাসরি রংপুরেই যেতাম।’
রোগীর স্বজন মকবুল ইসলাম জানান, ‘চিকিৎসক সংকটের কারণে ইমারজেন্সি সেবা পেতে অনেক সময় দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। জায়গার অভাবে রোগীরা বারান্দা বা মেঝেতে শুয়ে থাকেন, কেউ কেউ চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘এখানে চিকিৎসক, জনবল এবং ওষুধের সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার।’
নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘৪৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশিত হয়েছে। এখান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক পদায়ন করা হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন