বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

শুল্কের প্রভাব

যুক্তরাষ্ট্রে  পোশাক রপ্তানি ১.২৫ বিলিয়ন ডলার কমতে পারে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রে  পোশাক রপ্তানি ১.২৫ বিলিয়ন ডলার কমতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য প্রবেশে যে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন, তাতে পোশাক রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের আয় সোয়া ১ বিলিয়ন ডলার কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক। 

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এমন হিসাব তুলে ধরেন তিনি। ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ও স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের দুশ্চিন্তা ও সুযোগ’ নিয়ে এ কর্মশালায় অর্থনীতিবিদ রাজ্জাক বলেন, ‘যে সিমুলেশন আমরা করেছি, আমরা দেখতে পাচ্ছি, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্র যত রেডিমেড গার্মেন্টস ইম্পোর্ট করে, সেটা এ বছর ১২ শতাংশ ফল করবে। রাফলি যদি আপনারা ধরেন যে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের আগে ইউএস ৮০ থেকে ৮৪ বিলিয়ন ডলারের রেডিমেড গার্মেন্টস আমদানি করত, এখন যদি ১২ শতাংশ ফল করে, তাহলে টোটাল আমদানি প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের মতো কিন্তু কমে যাবে।

সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কতটা কমতে পারে, সেই ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা ১৪ শতাংশের মতো ফল করতে পারে।’ তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি প্রায় ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার কমতে পারে বলে তিনি ধারণা দেন।

সিমুলেশন হচ্ছে অর্থনীতিতে গবেষণার একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে কোনো একটি নীতি বা সিদ্ধান্তের ফলে এর প্রভাব কী পরিমাণে পড়তে পারে, তা নিরূপণ করা হয়। বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে তৈরি পোশাকই ৭৩৪ কোটি ডলারের। দীর্ঘ আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে প্রথমে ৩৫ শতাংশ এবং পরে আরও কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।

বাংলাদেশের প্রতিযোগী অনেক দেশের ক্ষেত্রে যা এখনো অনেক বেশি। তবে তাতে খুশি হওয়ার খুব বেশি সুযোগ দেখছেন না বেসরকারি গবেষণা সংস্থা র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান রাজ্জাক। তার ভাষ্য, ‘আপনারা অনেকে খুশি হয়েছেন যে, আরে আমরা যেখানে ২০ শতাংশ, ইন্ডিয়ার সেখানে ৫০ শতাংশ, তাহলে হয়তো আমরা বেশি রপ্তানি করতে পারব। আমরা সেখানে বলার চেষ্টা করছি যে, না। যেহেতু টোটাল বাজেটটা সুইং করতেছে ওই বাজারে, সে ক্ষেত্রে আমরা খুব ট্রিকি একটা সিচুয়েশনের মধ্যে আছি।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের তৈরি পোশাকের শেয়ার বাড়তে পারে। আমাদের যে অংশ তাদের বাজারে রয়েছে, সেটা বাড়তে পারে। কিন্তু ওইটা বাড়ার পরেও টোটাল রপ্তানি না-ও বাড়তে পারে। যেহেতু ওভারঅল মার্কেটের সাইজ যেটা, তাদের আছে সেটা সঙ্কুচিত হচ্ছে। সেটা আমাদের একটু মনে রাখতে হবে। একই সঙ্গে বাড়তি শুল্কের ফলে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি যে পরিমাণ বাড়বে, তাতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের মুনাফাও কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা বলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক গবেষণার কথা তুলে ধরে রাজ্জাক বলেন, কোভিড মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়ায় সীমিত আয়ের মানুষ যে দুটি পণ্য কেনা সবচেয়ে বেশি কমিয়েছিল, তার একটি হলো পোশাক। সে কারণে বাংলাদেশকে শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা আরও ৩ থেকে ৫ বছর সময় চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকারকে। তবে অর্থনীতিবিদ এ রাজ্জাক এ বিষয়ে একমত নন।

তিনি বলেন, তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নিই যে বিগত সরকার তথ্য-উপাত্ত বাড়িয়ে দেখিয়েছে, এখন সেই তথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা ঠিক হবে নাÑ এই যুক্তি খাটবে না। কারণ দেশের মাথাপিছু আয় যদি ৫০ শতাংশও কম ধরা হয়, তাতেও বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উতরে যায়। তার মত হলো, বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) কাছে আবেদন করা যেতে পারে যে, নতুন করে তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল্যায়ন করুক এবং রাজনৈতিক রূপান্তরকে বিবেচনায় নিক। তারা মূল্যায়ন করে যদি বাংলাদেশের পক্ষে সুপারিশ করে তখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সেটি নিয়ে ভোটে গেলে বাংলাদেশের পক্ষে মেজরিটি ভোট পড়তে পারবে। এলডিসি থেকে উত্তরণ না হওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে অর্ধেকের বেশি সমর্থন বাংলাদেশের পক্ষে পেতে হবে।

বাংলাদেশের মতো নেপালেরও ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের কথা। সেখানেও রাজনৈতিক রূপান্তর ঘটছে। এখন দুই দেশ একসঙ্গে বিষয়টি তুলে ধরে কূটনৈতিক চেষ্টা চালালেও বাংলাদেশের পক্ষে রায় আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তাতেও যে কাজ হবে, সেই নিশ্চয়তা নেই জানিয়ে রাজ্জাক ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর পরামর্শ দেন।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান অনুষ্ঠানে জানান, এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে দিতে বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে। তবে তিনিও বলেছেন, এ বিষয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া ‘উচিত হবে না’।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!