পাহাড়ের বুকে দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা ঝুপরি ঘরেই কাটছিল অসহায় বৃদ্ধ ফুলেশ্বর চাকমা ও তার পরিবারের জীবন। বয়সের ভার, দারিদ্র্যের কঠিন চক্র আর সরকারি সহায়তার অভাবে বছরের পর বছর তারা ছিলেন কষ্টে জর্জরিত। অবশেষে স্থানীয়দের উদ্যোগ এবং সেনাবাহিনীর মানবিক সহযোগিতায় বদলে গেল সেই দুঃখের গল্প।
স্থানীয়দের আবেদনের ভিত্তিতে ফুলেশ্বর চাকমার অসহায় জীবনের খবর পৌঁছে যায় সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডারের কাছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে সেনা কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে শুরু হয় নতুন ঘর নির্মাণের কাজ।
গতকাল বুধবার রাঙামাটি রিজিয়নের কাপ্তাই ১০ আরই ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে ফুলেশ্বর চাকমার নতুন ঘরের উদ্বোধন করেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম সাদিক শাহরিয়ার। এ সময় অন্য সেনা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ঘর হস্তান্তরকালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম সাদিক শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জানতে পারি এ অসহায় পরিবারের দুর্দশার কথা। এরপর সেনাবাহিনীর প্রধানের নির্দেশনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেই। আজ ফুলেশ্বর চাকমা ও তার পরিবারের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত ফুলেশ্বর চাকমা বলেন, ‘আগে তো ভাঙা ঘরে থাকতাম, এখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘর দিয়েছে। এখন সুখে-শান্তিতে থাকতে পারব। আমার খুব ভালো লাগছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারাও সেনাবাহিনীর এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সেনাবাহিনীকে না জানালে হয়তো এত দ্রুত সমাধান হতো না। সেনাবাহিনী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এটি শুধু একটি ঘর নয়, এটি স্বপ্ন পূরণের গল্প।’
রাঙামাটি রিজিয়নের পক্ষ থেকে বহুবার বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের কেউ গৃহহীন থাকবে না, কেউ অনাহারে থাকবে না। আজকের এ কার্যক্রম সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তব প্রমাণ।
অসহায় বৃদ্ধ ফুলেশ্বর চাকমার পরিবারের মুখে এখন হাসি। মাথার ওপর নিরাপদ আশ্রয়ের ছায়া পেয়ে তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। সেনাবাহিনীর এই মহৎ উদ্যোগ শুধু একটি পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন করেনি, বরং সমাজে মানবিকতা ও ইতিবাচক পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন