শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:২৬ এএম

অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যেই নতুন কমিটি পাচ্ছে ছাত্রদল

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:২৬ এএম

ছাত্রদলের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

ছাত্রদলের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

সাংগঠনিক দুর্বলতাসহ নানা কারণে ডাকসুসহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভরাডুবি হয়।

ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এই প্রথম এমন বিপর্যয়ের কারণে একেবারেই সাংগঠনিক ভাবে শক্তি হারিয়ে বিএনপিকে রাজনৈতিক সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে থাকা সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির ও  সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আমানউল্লাহ আমান।  

দলীয় সূত্র বলছে, মূলত নেতৃত্বে থাকা এই ৩ জন নেতা তাদের ভিন্ন আদর্শে জুলাই বিপ্লবের পর ছাত্রদলকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছে। সারাদেশের মোটা টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগ, শিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজস্ব পাওয়ার ব্যবহার করে রাকিব, নাছির, আমান একক আধিপত্য ব্যবহার করে দলীয় পদ পদবী দেয়েছেন।  

সূত্র মতে জানা যায়, সারাদেশে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটিতে প্রায় ২ হাজারের বেশি ছাত্রলীগ ও শিবির কর্মী রয়েছে।  যেটার দায়ভার বর্তমান কমিটি এড়িয়ে যেতে পারে না বলে আঙ্গুল তুলছেন বর্তমান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্যাগী নেতাকর্মীরা।  

তাদের অভিযোগ- ছাত্রদল, ডাকসুর নির্বাচনে ছাত্রশিবির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়েছেন। যদিও শিবিরের দায়িত্বশীল ও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বললে- তেমন কোনো সত্যতা না পেলেও বিষয়টি সর্বমহলে বেশ আলোচিত।  

তবে, ছাত্রদলের চলতি কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা বিগত সরকারের আমলে রাজপথের একাধিক ত্যাগী নেতাকর্মীরা বলছেন, ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এই প্রথম এমন বিপর্যয় দেখলো।  এর দায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক কোনো ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না।  

তারা চরম ভাবে দায়িত্বের অবহেলা করেছে এবং তারা কাউকে জবাবদিহিতার জায়গা রাখেনি। এবং ডাকসুর নির্বাচনে সরাসরি দূর্নীতি ও অনিয়ম জেনেও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা কোনো ফলাফলের আগে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলো না।  যেটার উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না বিএনপিপন্থি রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

এসব বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সহ-সভাপতি রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ছাত্রদলের দায়িত্বে থাকা ৩ ব্যক্তির কাছে জিম্মি ছিলো ছাত্রদল।  তারা মাঠের থেকে নিজেদের অযোগ্য লোকজন কমিটির সুপার ফাইভ দায়িত্বে এনেছেন।  

সারাদেশের ছাত্রদলের ত্যাগীদের অভিযোগ- যোগ্যতা থাকার স্বর্থেও লবিং লাইনে দূর্বল থাকায় কমিটির যোগ্য জায়গায় তাদের রাখা হয়নি। বরং জেলা কমিটি থেকে শুরু করে মোটা টাকার লেনদেনের মাধ্যমে ৩ বিশ্লিষ্টনেতাদের আধিপত্যের দাপট ও নিজস্ব কোঠায় ঢাকার সাত কলেজের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এসব কমিটি গঠন করা হয় ২-৩ টি ছেলে মেয়ের বাবাকে এবং তারা অছাত্রদের লিস্টে, যাদের অনেকের বয়স ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। যেটা কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা নেতাদের থেকে বয়সদিগুন বললেও ভুল হবে না।  এরমধ্যে অনেকেই এইচ এইচ পাশ- তারা উচ্চ শিক্ষার ডিগ্রি অর্জন না করেও বছরের পর বছর ছাত্র হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে আসছে।  

অভিযোগ রয়েছে- অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ ইউনিটের ছাত্র না হয়েও গ্রুপিং রাজনীতি করার সুবাদে অছাত্রদের কমিটিতে রাখার অভিযোগও কম নয়। এসব কারণে রাজনৈতিক মাঠে ঘুরে দাঁড়ানো ছাত্রদল ও বিএনপি সাংগঠনিক সংকটের মধ্যে পড়েছে এবং ছাত্রদলের কতিপয় কিছু অসাধু নেতাদের চাঁদাবাজি, গ্রুপিং আধিপাত্যসহ বিভিন্ন ধরণের বৈষম্যের শিকারে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি বর্তমান কমিটিতে থাকা অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

দলের বিশ্বস্ত সূত্র মতে,  ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে চরম ভরাডুবির পর ছাত্রদলের সাংগঠনিক কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আসছে।  ভোটের মাঠে অস্তিত্ব সংকটে পড়া এবং অভ্যন্তরীণ সমন্বয়হীনতাসহ নানা কারণে সংগঠনটিতে নতুন নেতৃত্ব আনতে চায় বিএনপি।  

এরই অংশ হিসেবে বর্তমান কমিটি অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যেই ভেঙ্গে দিয়ে নতুন ও যোগ্যদের অগ্রধিকার দেওয়া হবে। তবে বর্তমান কমিটির রাকিব ও নাছিরকে আগের মতো মিডিয়ার সামনে দেখা যাচ্ছে না।  অনেকেই বলছেন-তাদের চেয়ার না থাকায় রাজনৈতিক মাঠ থেকে তারা নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। অনেকের মন্তব্য- চলতি মাসের শেষ দিকে ও অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে নতুন কমিটি পেতে পারে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।  

বিএনপির আরেকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি নিয়ে বিক্ষুব্ধ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।  সম্প্রতি তিনি কোনো মাধ্যমে নয়- নিজস্ব সোর্স কাজে লাগিয়ে ও যোগ্যদের অগ্রধিকার দিতে কৌশলী ভাবে কাজ করছেন।  

এক্ষেত্রে তিনি যোগ্যতা যাচাই-বাচাইয়ের করে সম্ভব্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সুপার ফাইভ কমিটির নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির পল্টন অফিস ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের তথ্য মতে, নতুন কমিটির সভাপতির পদে যারা আলোচনার শীর্ষে রয়েছে বেশ কয়েকজন।

 

এরমধ্যে- ০৭-০৮ সেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম,  ২০০৮-০৯ সেশনের বর্তমান কমিটির সহসভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সহ সভাপতি  ইজাজুল কবির রুয়েল।  রুয়েল দীর্ঘদিনের রাজপথের ত্যাগী ছাত্রনেতা।  

আরেকজন হলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম রিয়াদ। তিনি রাজপথে ও রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় থাকলেও বয়স একটু বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই পদে আরও যার নাম শোনা যাচ্ছে, তিনি হলেন সহসভাপতি এইচ এম আবু জাফর। তাকে সবাই পছন্দ করলেও লবিং লাইনে দুর্বল থাকার সুবাদে কিছুটা পিছিয়ে আছেন।

দলীয় বিশেষ একটি সূত্র নিশ্চিত করে জানায়, সভাপতি পদে সর্বপ্রথম যার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তিনি হলেন- ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের বিগত দিনের রাজপথ এবং জুলাই-বিপ্লব আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা, দলের দুঃসময়ের ছাত্রনেতা বিগত দিনে ডাকসুর নির্বাচনে দলের পক্ষে ভিপি মনোনীত পদপ্রার্থী বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি দায়িত্বশীল, পরিছন্ন ও ক্লিন ইমেজের ছাত্রনেতা হিসেবে বহুল আলোচিত।  

এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনার শীর্ষে যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন- ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বর্তমান ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান। তিনি আপোষহীন একজন ছাত্রনেতা।  

এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনার শীর্ষে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন। তিনি ছাত্রদলের বিগত দিনের রাজপথ ও জুলাই-বিপ্লবের আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও দলের দুঃসময়ের ত্যাগী ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম,  এছাড়া প্রচার সম্পাদক শরিফ প্রধান শুভ এ পদে আলোচনায় রয়েছেন।  এক্ষেত্রে কমিটি একটু জুনিয়র হলেও শুভ সামনে আসতে পারে।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন-  তারা হলেন ২০১০-১১ সেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, ১১-১২ সেশনের রাজু আহমেদ, সোহেল রানা, ইব্রাহিম খলিল ও শামীম আক্তার শুভ। এর মধ্যে রাজু এগিয়ে রয়েছেন।  সবাই ধারণা করছেন, রাজু হলেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদের স্নেহশীল। 

এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আলোচনায় যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলেন-০৮-০৯ সেশনের মঞ্জুরুল আলম রিয়াদকেও সিনিয়র সভাপতি হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে,কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি কাজী জিয়াউদ্দিন বাসেতর নামও বেশ আলোচিত, এর বাহিরে ০৯-১০ সেশনের সালেহ মোহাম্মদ আদনানের নামও শোনা যাচ্ছে। 

একই সঙ্গে ১ম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, ১০-১১ সেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তারুকুল ইসলাম তারিক,১০-১১সেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধরণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ ও যুগ্ম সম্পাদক   আসাদুজ্জামান রিংকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন,সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজ আহমেদ প্রিন্স এই পদে এগিয়ে রয়েছেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নাসিরউদ্দিন শাওন এই পদে নীতি নির্ধারকদের চিন্তায় রয়েছেন।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাওয়ার সুযোগ পায়।  অনেকটা নির্বিঘ্নে সংগঠন গোছানোরও পথ তৈরি হয়।  

কিন্তু এক বছরের মাথায় এসে সেভাবে সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে না পারা, ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএনপির দায়িত্বশীলদের সমন্বয় এবং সহযোগিতার ঘাটতি, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে ছাত্রদলের তৎপরতা মুখ থুবড়ে পড়েছে।  যা নিয়ে খোদ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ আছে।  এমন পরিস্থিতিতে খুব কম সময়ের মাধ্যে কমিটি ভেঙে দিয়ে একটি নতুন নেতৃত্ব গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।

উল্লেখ্য, এরআগে ২০২৪ সালের ১ মার্চ রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সভাপতি ও নাসির উদ্দীন নাসিরকে সাধারণ সম্পাদক করে  ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।  ওই বছরের ১৫ জুন ছাত্রদলের ২৬০ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ডাকসুর পর জাকসুতেও ছাত্রদলের চরম ভরাডুবি বিএনপিকে ভাবিয়ে তুলছে। বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন ও বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল দায়িত্বে ছিলেন।

পরবর্তীতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন। অভিযোগ আছে, ছাত্রদলের প্যানেলের শীর্ষ তিন পদের প্রার্থীদের নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পছন্দ-অপছন্দের বিষয় ছিল।

বিএনপির দায়িত্বশীলদের মধ্যেও এ নিয়ে টানাপোড়েন ছিল।  যার প্রভাব পড়েছে নির্বাচন পূর্ববর্তী সার্বিক কার্যক্রমে।  এমন কি নির্বাচনী তহবিল যথাযথ বণ্টন হয়নি এমন অভিযোগও আছে।  অবশ্য এ নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের একজন সহ-সভাপতি  বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে শিবির নাকি ১৫ কোটি টাকা খরচ করেছে।  সেখানে ছাত্রদলের কত খরচ করেছে কেউ জানে? বরং শিবিরের নিকট থেকে বর্তমান কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যদিও এসব অভিযোগের ভিত্তি না থাকলেও দায়িত্বরতরা ছাত্রদলকে পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে দাঁড় করিয়েছে।

এই বিষয়ে বিএনপি'র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাবেক দায়িত্বশীল এবং জনপ্রিয় এক সভাপতি নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ছাত্রদলের বর্তমান যে অবস্থা এটি অতীতের ছিল না। ৫ আগস্টের আগের ছাত্রদল এবং পরবর্তী ছাত্রদল এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে সেটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। 

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদল থাকলে বাংলাদেশ থাকবে, বাংলাদেশ থাকলে ছাত্রদল থাকবে। আমি আশা করি সকল সংকট এবং যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াবে শহীদ জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।’

এই বিষয়ে বিএনপির উপদেষ্টা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দীন বকুল রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ছাত্রদল দীর্ঘ ১৬ বছর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি। তাছাড়া জুলাই বিপ্লবের পরে রাজনৈতিক মামলার দৌড়ঝাঁপের কারণে ও ক্যাম্পাসে তেমন সময় বা অবস্থা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ ও সময় পায়নি। যার প্রভাব পড়েছে ডাকসু ও জাকসুর নির্বাচনে। যেটা আমরা লক্ষ্য করেছি।‌’

তিনি বলেন, ‘ডাকসু ও জাকসুর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অনেক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এখানে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ শিবির ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রোপাগান্ডা ও অপপ্রচার চালিয়েছে। যেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আশা করি সকল ধরনের অপপ্রচার ও ঘাতপ্রতিঘাত মোকাবেলা করে ছাত্রদল সাংগঠনিকভাবে শক্তি অর্জন করবে। এবং দেশের রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

ছাত্রদলের কমিটি ভাঙার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পর্যায় ক্রমেই একটি নির্দিষ্ট সময়ে ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হয়তো। তবে মনে হচ্ছে খুব কম সময় ও দুই এক মাসের মধ্যে ছাত্রদল হয়তো নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছে। তবে নতুন নতুন নেতৃত্ব ছাত্রদলকে আরো সুসংগঠিত করে এবং রাজপথ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত হয়।’

Link copied!