বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা নতুনভাবে স্বাধীনতা পেলেও এখনো আমাদের দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত থেমে নেই।’ শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পতিত আওয়ামী সরকারের বিগত ১৬ বছরের দূর্বিষহ শাসনামলে মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে কবরস্থ করা হয়েছিল। দেশের মানুষ তাদের সব অধিকার হারিয়ে ফেলেছিল। জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই সফল হবে না। শহীদ ডা. মিলনের আত্মত্যাগ সবসময় আমাদের প্রেরণা জোগাবে।’
ডা. মিলনসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে আমি ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের এক নির্ভিক সৈনিক শহীদ ডা. শামসুল আলম মিলনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অকুতোভয় শহীদ ডা. মিলনের আত্মদানে হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত হয়। তার আত্মদানের মধ্য দিয়ে ৯ বছরের স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন চূড়ান্ত বিজয়ের পথে ধাবিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারকে উৎখাত করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর দৃঢ় অঙ্গীকার। বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে তিনি গণতন্ত্রের বিজয় এনেছিলেন। এই পথ ধরেই দেশে স্বৈরাচারের পতন ঘটে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্রের নবযাত্রা শুরু হয়।’
বুধবার দুপুরে (২৬ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বাণীটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে : মির্জা ফখরুল
এদিকে শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বাণী দিয়েছেন। বাণীতে মির্জা ফখরুল বলেন, ’৮০’র দশকে স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অবিস্মরণীয় নাম।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ডা. মিলনের আত্মদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে তিনি শহীদ হন। তার শাহাদাতবার্ষিকীতে আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনের শৃঙ্খল থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে গিয়েই শহীদ হয়েছেন ডা. শামসুল আলম খান মিলন। সব কর্তৃত্ববাদী এবং গণতন্ত্রবিরোধী স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে ডা. মিলন সবসময় আমাদের প্রেরণার উৎস।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিগত ১৬ বছরের ভয়াবহ দুঃশাসনে মানুষের ভোট, বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতাসহ সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। মানুষের জানমালের কোনো ন্যূনতম নিরাপত্তা ছিল না। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের মাত্রা ছিল বর্ণনাতীত।’
‘৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে দেশের মানুষ স্বৈরাচারমুক্ত হলেও ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে, তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। কিন্তু দেশের জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ, তাই ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই সফলকাম হতে পারবে না।’
‘শহীদ ডা. মিলনের আত্মত্যাগ সবসময় আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। গণতন্ত্রকে মজবুত ভীতের ওপর দাঁড় করাতে পারলেই ডা. মিলনের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।’


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন