বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জাহিদুল ইসলাম, দুমকি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ০১:০২ এএম

হাঁস পালনে স্বাবলম্বী তরুণ উদ্যোক্তা মশিউর

জাহিদুল ইসলাম, দুমকি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ০১:০২ এএম

হাঁস পালনে স্বাবলম্বী তরুণ  উদ্যোক্তা মশিউর

সমগ্র খামারজুড়ে হাঁসের পদচারণা, ডাকাডাকি আর প্রাণবন্ত ছুটোছুটিতে মুখর চারপাশ। কখনো ডাঙায় আবার কখনো পানিতে দলে দলে হাঁসের বিচরণ-দৃশ্যটি বেশ মনোমুগ্ধকর। প্রতিদিন ভোরেই সাদা ও বাদামি রঙের ডিম সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন খামারি মশিউর রহমান মাঝি ও তার সহকর্মীরা। হাঁসের কোলাহলে খামারের সকাল যেন এক আলাদা সৌন্দর্যে ভরে ওঠে।

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার দক্ষিণ মুরাদিয়ায় হাঁস পালনকে কেন্দ্র করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মশিউর রহমান ও তার পরিবার। মাত্র এক বছর আগে বাড়ির পাশের পতিত আবাদহীন উচ্চভূমি ও মজা পুকুর ঘেরা ৭৮ শতক জমিতে গড়ে তোলেন হাঁসের খামার। গত বছরের নভেম্বরের শুরুতে প্রতিটি ২০০ টাকা দরে ২ মাস বয়সি খাকি ক্যাম্বল ও চিংডিং জাতের ১,৩০০ হাঁসের বাচ্চা কিনে লালন-পালন শুরু করেন তিনি।

ছয় মাসের মাথায় খামার থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০০টির মতো ডিম সংগ্রহ শুরু হয়। পরে আরও ৫,০০০ হাঁসের বাচ্চা কিনে খামারের পরিধি বাড়ান। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই খামার থেকে প্রতিটি ৬০০ টাকা দরে তিন হাজার হাঁস বিক্রি করেন তিনি। বর্তমানে খামারে থাকা হাঁসগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার ডিম সংগ্রহ করা হয়।

খামারি মশিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকায় নানা কাজ করে জীবিকা চালালেও নিয়মিত চাকরি না থাকায় বাড়ি ফিরে আসি। তারপর নিজের ফেলে রাখা জমিতে হাঁসের খামার করি। প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে পুকুর খনন, ঘর নির্মাণ ও বাচ্চা কিনে খামার শুরু করি। গত এক বছরে ডিম ও হাঁস বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় ১০ লাখ টাকার বেশি আয় হয়েছে।’

মশিউরের ছোট ভাই তুহিন জানান, ‘এখন প্রতিদিন দেড় হাজারের মতো ডিম পাওয়া যায়। হাঁসের খাবার বাবদ দৈনিক প্রায় সাত হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিটি ডিম ১৫ টাকা দরে পাইকারি দিচ্ছি। পটুয়াখালী ও দুমকি থেকে পাইকাররা এসে ডিম নেন। খরচ বাদেই প্রতিদিন ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ থাকে। এ ছাড়া খামারে প্রায় ১২ লাখ টাকার হাঁস আছে।’

খামারের খাবার তৈরিতে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়। মশিউরের বাবা মোশারেফ মাঝি বলেন, ‘শুঁটকি, ভুট্টা, চালের কুঁড়া, শামুক-ঝিনুকের গুঁড়া ও ডালের গুঁড়া একসঙ্গে পিষে হাঁসের খাবার তৈরি করি। রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।’ মশিউর জানান, ডিমের পাশাপাশি মাংসের উদ্দেশ্যে অন্য জাতের হাঁস পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া খামারে বর্তমানে ৫০টি ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল এবং বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক কবুতর রয়েছে, যেখান থেকে মাসে ৩৫-৪০ জোড়া বাচ্চা বিক্রি করছেন তিনি।

স্থানীয় বায়তুল আমান দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, ‘মশিউরের খামার থেকে আমিসহ অনেকে নিয়মিত হাঁস ও ডিম কিনি। খামারের দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ দেখতে প্রতিদিনই শিক্ষার্থী ও পথচারীরা ভিড় জমায়।’

দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশিক হাজরা জানান, ‘বর্তমানে দুমকি উপজেলায় সবচেয়ে বড় হাঁসের খামার মশিউরের। আমরা নিয়মিত খামার পরিদর্শন করি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!