রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০২:৫৪ এএম

পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০২:৫৪ এএম

পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে  পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালকের পদ থেকে ‘অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে’ পাঠানোর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য খাতের সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক হেলথ পলিসি ওয়াচ।
গতকাল শনিবার দেশের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যমে খবরটি আসে হেলথ পলিসি ওয়াচের বরাতে। তবে এ খবরের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে বৈশ্বিক সংস্থাটির এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ভারতের নয়াদিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কমিটির ৭৬তম অধিবেশনে সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নির্বাচিত হন পুতুল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ দায়িত্ব নেন।
হেলথ পলিসি ওয়াচ বলছে, আঞ্চলিক পরিচালকের এ পদ থেকে পুতুলকে ১১ জুলাই ‘অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠানো’ হয়েছে। অটিজম নিয়ে কাজ করেনÑ এমন পরিচিতি পাওয়া পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুটি মামলা করার পর তাকে ছুটিতে পাঠানোর এ খবর সামনে এলো।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা হেলথ পলিসি ওয়াচ জানিয়েছে, ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস এক সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে কর্মীদের জানান, শুক্রবার থেকে পুতুল ছুটিতে যাচ্ছেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথারিনা বোহম। বোহম ১৫ জুলাই মঙ্গলবার নয়াদিল্লির অফিসে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দপ্তর ভারতের দিল্লিতে। সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারকে এই কার্যালয় হয়েই যোগাযোগ করতে হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে পুতুল সেখানেই আছেন। আর গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তার মা শেখ হাসিনাও আছেন দিল্লিতে।
গেব্রিয়াসুস ১৫ জুলাই বেমকে নয়াদিল্লি গিয়ে পুতুলের দায়িত্ব নিতে বলেছেন বলেও হেলথ পলিসি ওয়াচের খবরে বলা হয়েছে। গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
শেখ হাসিনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ তার মেয়ে পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ পাইয়ে দিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। এমনকি গত জানুয়ারিতে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা পুতুলের নিয়োগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে গত অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বলা হয়, তারা পুতুলকে বাদ দিয়ে সংস্থাটির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে চায়।
৩০ অক্টোবরের ওই সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকার তরফে বলা হয়েছে, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে একটি চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে সরকার বলেছে, বাংলাদেশ যেন সরাসরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে, তাদের যেন পরিচালকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে না হয়।
এদিকে শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট করেন শফিকুল আলম। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, সায়মা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, জাল সনদ ব্যবহার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগের তদন্ত চলমান। আমরা ডব্লিউএইচওর সিদ্ধান্তকে জবাবদিহিতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখি।
তিনি আরও লেখেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এর একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন, যেখানে সায়মা ওয়াজেদকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হবে, তার সব সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা হবে এবং এই মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্বের সততা ও জাতিসংঘ ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করা হবে। বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ববাসী স্বচ্ছতা, সততা ও ন্যায়বিচারের উন্মেষ দেখে সন্তুষ্ট।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পুতুল দায়িত্ব নিলেও তার নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই অভিযোগ ছিল যে, তার প্রভাবশালী মা শেখ হাসিনা তার পক্ষে প্রভাব খাটিয়েছেন। হেলথ পলিসি ওয়াচের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে।
দুদকের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র অনুযায়ী, পুতুল আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার প্রচারের সময় নিজের একাডেমিক রেকর্ড সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেন, যা বাংলাদেশ দ-বিধির ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) এবং ৪৭১ (জাল দলিল ব্যবহার) ধারার লঙ্ঘন।
দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম জানান, পুতুল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার একটি সম্মানী পদ দেখিয়ে যোগ্যতা প্রদর্শনের চেষ্টা করেছিলেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় অস্বীকার করেছে।
এ ছাড়া পুতুলের বিরুদ্ধে তার নেতৃত্বাধীন সূচনা ফাউন্ডেশনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২.৮ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের অভিযোগ রয়েছে, যা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে এই অর্থ কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, তার বিস্তারিত দেয়নি দুদক।
এই অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে দ-বিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা ও অসদাচরণে সম্পত্তি গ্রহণ) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ।
অভিযোগ দায়েরের পর থেকে পুতুল বাংলাদেশে গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবে সফর করতে পারছেন না।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!