বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:৪২ পিএম

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল : জাতিসংঘের প্রতিবেদন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:৪২ পিএম

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল : জাতিসংঘের প্রতিবেদন

হামাসকে পরাজিত করে গাজা নগরীর সম্পূর্ণ দখল নিতে শহরের উপকণ্ঠে এবার সবচেয়ে বড় স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, গাজা সিটিতে তারা নতুন ও সম্প্রসারিত সামরিক আক্রমণ চালাচ্ছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এই শহরকে হামাসের শেষ শক্ত ঘাঁটিগুলোর একটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনএন। ইসরায়েলি দুই কর্মকর্তা সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রবেশ না করলেও এবার শহরটিকে প্রধান লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। রাফাহ ও খান ইউনিসসহ গাজার অন্য শহরগুলো ইতিমধ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে। ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, গাজার রাজধানীও দ্রুত একই পরিণতির মুখে পড়তে পারে। স্থল আক্রমণের আগে বহুতল ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বোমাবর্ষণও বাড়ানো হয়েছে। অভিযানের ঘোষণা এসেছে এমন সময়ে, যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জেরুজালেমে অবস্থান করছেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনই প্রকাশ পেয়েছে। মঙ্গলবার এই অভিযানের ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন ‘গাজা জ¦লছে।’ নগরীর ওপর আকাশ, সমুদ্র ও স্থল তিন দিক দিয়ে আক্রমণ চলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বিকট বিস্ফোরণ দেখার কথা জানিয়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। তারা মঙ্গলবারের বোমা হামলাকে গাজায় দুই বছরের যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক বলে বর্ণনা করেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থলসেনারা গাজা সিটির অনেক ভেতরে প্রবেশ করছে। কেন্দ্রস্থলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তারা। আগামী দিনগুলোতে সেনাসংখ্যা আরও বাড়বে।

গাজা সিটিতে ৩ হাজার হামাস যোদ্ধা রয়েছে বলে বিশ্বাস আইডিএফের। তাদের মোকাবিলায় এই বাড়তি সেনা নামানো হবে বলে জানিয়েছে আইডিএফ। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সকালের দিকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগই গাজা সিটির।

সেখানে ইসরায়েলের বিমান হামলা চলার পাশাপাশি কয়েকটি স্থানে ইসরায়েলি ট্যাংক ঢুকে পড়ার খবর জানিয়েছে বাসিন্দারা। তাদের অনেকেই পালিয়ে যাচ্ছে, যদিও তাদের নিরাপদে যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই।

গাজার সবচেয়ে বড় এই শহরে এখনো কয়েক লাখ বাসিন্দা অবস্থান করছে, যেখানে এরই মধ্যে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, অভিযানটি এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। 
ইসরায়েল নতুন করে গাজা সিটির বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। গাজা নগরী দখল এবং এর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে একটি পরিকল্পনা গত মাসে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। দেশটির যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভায় ওই পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। 

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল :

গাজার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইয়েল জাতিগত নিধন (জেনোসাইড) চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন। জাতিসংঘের নতুন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত পাঁচটি গণহত্যা কর্মকা-ের মধ্যে চারটি গাজায় সংঘটিত হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার ও নৃশংস হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো চলছে।

৭২ পাতার এই তদন্ত প্রতিবেদন গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদনকে এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে প্রামাণ্য ফলাফল বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ‘চারটি জাতিগত নিধন কর্মকা-’ পরিচালনা করেছে বলে তাদের তদন্তে উঠে এসেছে। এগুলো হলোÑ একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা; তাদের গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করা; এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, যাতে করে ওই গোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যায় এবং জন্ম প্রতিরোধ করা। প্রতিবেদনে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্য এবং সেনাদের কর্মকা-ের ধরনকে গণহত্যার অভিপ্রায়ের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটিকে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলের এক মুখপাত্র জাতিসংঘ কমিশনের তিন বিশেষজ্ঞকে ‘হামাসের পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযুক্ত করে বলেছেন, তারা হামাসের মিথ্যা দাবির ওপর পুরোপুরি নির্ভর করেছেন, যা আগেই খ-িত হয়েছে।

ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসই ইসরায়েলে গণহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। তারা ইসরায়েলের ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে, পরিবারগুলোকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে এবং প্রতিটি ইহুদিকে হত্যার ‘প্রকাশ্য লক্ষ্য’ ঘোষণা করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় নজিরবিহীন সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৪ হাজার ৯০৫ জন নিহত হয়েছে। গাজার অধিকাংশ মানুষ বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে; প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে; স্বাস্থ্যসেবা, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং জাতিসংঘ সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছেন।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!