গত শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালে ভয়াবহ আগুন লেগে বিমান চলাচল কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বিঘিœত হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিবিসিসিআই) সভাপতি গতকাল রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় জানান, আগুনের ঘটনায় সৃষ্ট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছুঁয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন লাগার ঘটনাটি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রস্তুতির ঘাটতির পরিচায়ক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো সাইটে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও, নিরাপত্তা ও জরুরি প্রতিক্রিয়ার প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি দুর্বলতা প্রকট হয়েছে। বিশেষ করে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, দাহ্য ও রাসায়নিক পণ্য সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব রয়েছে।
সরকার, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন ডিবিসিসিআই সভাপতি। এগুলো হচ্ছেÑ ১. আগুন লাগার ঘটনা ও তদন্তের সর্বশেষ তথ্য দ্রুত এবং স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করতে হবে।
২. ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য কার্গো বিমা দাবির দ্রুত নিষ্পত্তি, কাস্টমস ছাড়পত্র দ্রুততর করা এবং অতিরিক্ত ফ্লাইটের জন্য শুল্কমুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. কার্গো এলাকা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য স্বাধীন প্রযুক্তিগত অডিট পরিচালনা করতে হবে। ৪. বিকল্প শিপমেন্ট রুট ও সাময়িক ফ্রেট হাবের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানির ক্ষতি কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
৫. ক্ষতিপূরণ ও ঝুঁকি ভাগাভাগির জন্য সরকার, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায় সংগঠনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সংলাপ শুরু করতে হবে। ডিবিসিসিআই ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রস্তুতি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিলে এ ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে একই ধরনের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হবে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে আগুন লাগার কারণ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের আশ্বাস দিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে দেশের প্রধান বন্দর হিসেবে কাজ করা এই বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে পুনরায় এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।