আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩০০ আসনের মধ্যে ইতিমধ্যে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। বিতর্কিত বক্তব্যে জড়িয়ে মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করায় প্রার্থী রয়েছেন ২৩৬ জন। যদিও এই তালিকায় নাম নেই দলের অনেক হেভিওয়েট ও ত্যাগী নেতাদের। যার মধ্যে স্থায়ী কমিটির ৪ সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমানের নাম রয়েছে। মনোনয়ন তালিকায় নাম নেই দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব-উন-নবী খান সোহেল, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, শামসুজ্জামান দুদু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাও নেই মনোনয়ন তালিকায়। হেভিওয়েট ও ত্যাগী এসব নেতার বাদ পড়া নিয়ে রাজনীতির মাঠে চলছে সরব আলোচনা। সিনিয়র এই নেতাদের মূল্যায়নের দাবি উঠেছে তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্য থেকে।
অভিযোগ আছে, বিগত ১৫ বছরে মাঠে নিষ্ক্রিয় থাকাদের নামও আছে মনোনয়ন তালিকায়। কারো কারো বিরুদ্ধে সংস্কারপন্থি থাকার অভিযোগও আছে। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলে কোন্দল বাড়ছে। এ নিয়ে অর্ধশতাধিক আসনে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে ৮-১০টি আসনের বিরোধ প্রকাশ পেয়েছে। আরও অন্তত ৪০টি আসনে চাপা বিরোধ রয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বহিষ্কারের ভয়ে অসন্তোষের বিষয়টি এখনো প্রকাশ্যে না এলেও যেকোনো সময় বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে বলে কেন্দ্র ও জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে দলীয় সূত্র বলছে, যেসব ত্যাগী নেতারা এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি, তাদের ভবিষ্যতে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে বিতর্কিত ও আওয়ামী শাসনামলে নিষ্ক্রিয় থাকা নেতাদের দেওয়া মনোনয়ন নতুন করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বেশ কিছু প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের দেওয়া হতে পারে।
সাধারণত নির্বাচনি তপশিল ঘোষণার পর প্রার্থী তালিকা প্রসার করার রেওয়াজ থাকলেও এবারই আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ, সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কিছু আসনে চলছে টানা প্রতিবাদ। নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা-ক্ষোভ। এতে অনেকটা চাপে পড়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।
এসব কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি আসনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এসব ঘটনা কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ওদিকে জামায়াতের শক্তিশালী আসনে বিএনপির দুর্বল প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, এমন কথাও বলছেন স্থানীয়রা। নেতাকর্মীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, যারা দলের দুঃসময়ে রাজপথে ছিলেন না, তারা সুসময়ে এসে মনোনয়ন পাচ্ছেন। যারা দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর বিদেশে বসে আরামদায়ক জীবনযাপন করেছেন, ৫ আগস্টের পর দেশে এসেছেন, তারাও মনোনয়ন পাচ্ছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে ক্ষোভ। কিন্তু অনেকেই সাংগঠনিক শাস্তির ভয়ে কিছু বলছেন না। যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই তালিকা চূড়ান্ত নয়। স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে, তাহলে তারা কোনো আসনে পরিবর্তন আনতে পারেন।
সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামে নির্বাচনি প্রচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনি জনসংযোগের সময় নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কোথাও সড়ক ও রেলপথ অবরোধ, কোথাও গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে, চাঁদপুর-৪ আসনে, মাগুরা-২ আসনে, মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে, কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট ও লালমাই) আসনে, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে, সাতক্ষীরা-৩ (কালীগঞ্জ-আশাশুনি) আসনে, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে, নীলফামারী-১৫ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনে, রংপুর-৩ (সদর-মহানগর) আসনসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, মিছিল, অবরোধ, সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ঝালকাঠি-২ আসনে (ঝালকাঠি সদর-নলছিটি) মনোনয়ন পাওয়ায় ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টোর বিরুদ্ধে বিগত ১৫ বছরে আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে না থাকার অভিযোগ তুলেছেন জেলা-উপজেলা নেতারা। নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ না রাখা এবং ১/১১-এর সময় সংস্কারপন্থি থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলা ও নলছিটির উপজেলা বিএনপির মূল নেতৃত্ব ইলেনকে মেনে নিতে পারছে না। প্রয়াত স্বামীর জনসমর্থনই তার একমাত্র ভরসা। মনোনয়ন না পাওয়া দলের ত্যাগী তিন প্রার্থী ইলেন ভুট্টোর বিরুদ্ধে হয়েছে একাট্টা। বিএনপির বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মাহবুবুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা আমিনা গাজী ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন বেঁকে বসেছেন ইলেন ভুট্টো মনোনয়ন পাওয়ায়। স্থানীয় নেতাদের দাবিÑ ইলেন জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী নিয়ে চলাফেরা করেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেন না। জনসমর্থন থাকলেও আওয়ীমী লীগ আমলসহ অতীতে কখনো বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না মনোনয়ন পাওয়া ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো।
ওদিকে ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী করা হয়েছে শফিকুল ইসলাম খান মিল্টনকে। এই আসনে নির্বাচন করবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান যোগ্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে নির্বাচনি এলাকা মিল্টনের স্থায়ী ঠিকানা কখনো ছিল না এবং তিনি এই এলাকায় কখনো রাজনীতিও করেননিÑএমনটাও বলা হচ্ছে।
কুমিল্লা-১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে কামরুল হুদাকে। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের হেভিওয়েট প্রার্থী। খুলনা-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী আসগরকে। তিনি ২০০১ সালে উপনির্বাচনে খুলনা-২ আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন। ওয়ান ইলেভেন-পরবর্তী সময়ে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ৫ আগস্টের পর তিনি আবার সক্রিয় হন। এই আসন থেকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার নির্বাচন করবেন।
ঢাকার উপকণ্ঠ নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের ৪টিতেই দিয়েছে একেবারে নতুন প্রার্থী। নারায়ণগঞ্জ-০১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু, নারায়ণগঞ্জ-০২ আসনে নজরুল ইসলাম আযাদ, নারায়ণগঞ্জ-০৩ আসনে আজহারুল ইসলাম মান্নান আর নারায়ণগঞ্জ-০৫ আসনে দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জানকে। নারায়ণগঞ্জ-০৪ এখনো খালি থাকলেও সেটি গুঞ্জন আছে জোটের শরিক নুর হোসেন কাসেমিকে দেওয়া হতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি প্রশ্ন রাখেনÑ যারা বিগত ১৫ বছর জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন, তাদের মূল্যায়ন করা হলো কোথায়? সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের মূল্যায়ন হয়নি। মনে কষ্ট আছে, কিন্তু ক্ষোভ নেই জানিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন তিনি।
চট্টগ্রাম-১২ আসনে ৫ আগস্টের পর এস আলম গ্রুপের গাড়িকা-ে দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা মোহাম্মদ এনামুল হককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যদিও পরবর্তী সময়ে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এই আসনে বিগত আওয়ামী আমলে গুমের শিকার সৈয়দ সাদাত আহমেদ ভোটার ও নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয় বলে তার অনুসারীরা দাবি করছেন। তাকে মনোনয়নবঞ্চিত করা হয়েছে বলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ। চট্টগ্রাম-৪ আসনে আসলাম চৌধুরীর পরিবর্তে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এখানেও নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিমউদ্দিন মিলনকে। এই আসনে ২০১৮ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী। নেত্রকোনা-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন রফিকুল ইসলাম হিলালী। আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এই আসনে সাবেক মেয়র ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল যোগ্য প্রার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া চাঁদপুর-২ আসনের বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী করা হয়েছে মো. জালাল উদ্দিনকে। তাকে নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে।
দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে মহাদেবপুর থানা বিএনপির সদস্য পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনির সমর্থকরা। প্রার্থী বদলের দাবিতে প্রায় দুই কিমি দীর্ঘ মানববন্ধন করে বিক্ষোভকারীরা। নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনে প্রার্থী পরিবর্তন না করলে এই আসন বিএনপি হারাবে বলে মনে করেন স্থানীয় বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা। পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রাজনীতি থেকে তার পিতা আখতার হামিদ সিদ্দিকীর পরিবারকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র চলছিল, যা এখনো চলমান। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলার ঘোষণাও দেন তিনি।
তিনি বলেন, সমালোচনাকারীরা সব সময় অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত টানা চারবার ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন মরহুম আখতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নু। তিনি ২০০১ সালে জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময়ে মহাদেবপুর-বদলগাছী এলাকায় উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার ছেলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি বিএনপির প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোট পান। আওয়ামী লীগের অধীনে সেই নির্বাচনে মাত্র ৩ ঘণ্টায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ভোট পেয়েছেন জনি। সেই সময়ে বিএনপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট বলে দাবি জনির সমর্থকদের।
চাঁদপুর-৪ আসনে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ হান্নানকে প্রার্থী না করায় তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছেন। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন থেকে খ- খ- মিছিল নিয়ে তারা ফরিদগঞ্জ পৌর বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হন এবং সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। কুমিল্লা-১০ আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত মোবাশ্বের আলমের সমর্থকেরা লাঙ্গলকোট রেলস্টেশন অবরোধ করে এবং অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মুন্সীগঞ্জ-১ শ্রীনগর আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মমিন আলীর সমর্থকরা এবং মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদে তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করেন।
যদিও বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে দলীয় এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় রাখা হবে। তাই দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে বিশৃঙ্খলা না করার আহ্বান তাদের। এরপরও যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করে, তাদের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলেও জানিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ৩শ আসনে ৩শ জনকেই দেওয়া যাবে নমিনেশন। এরচেয়ে বেশি মানুষকে তো দেওয়া সম্ভব নয়। খবর পাচ্ছি যারা মনোনয়ন পায়নি, তারা দু-তিন দিন চুপচাপ থাকলেও এখন কোথাও কোথাও বিক্ষোভ করছে। একজনের দেখাদেখি আরেকজন করছে। এর পেছনে পরাজিত শক্তি কিংবা আমাদের প্রতিপক্ষের ইন্দন আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের পক্ষ থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তার পক্ষে কাজ করে ধানের শীষকে বিজয়ী করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেন, ‘হেভিওয়েটদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নন। যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়াপড়শির ঘুম নাইÑ অবস্থাটা হয়েছে এমন। তালিকায় নাম না থাকা নেতারা ত্যাগী হলেও এলাকায় তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করা হয়েছে। চূড়ান্তভাবে যারা টিকিট বঞ্চিত হবেন তাদের দল আলাদাভাবে মূল্যায়ন করবে। বিএনপি অনেক বড় দল, তাদের অনেক ক্যাপাসিটি। উচ্চকক্ষ আছে, সেখানেও তো লোক লাগবে। তা ছাড়া দল পরিচালনা করার জন্যও রাখা হবে কাউকে কাউকে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কথা হলো, একজন দুই পদে থাকবে না।’

