শিশু হাসপাতালে পরীক্ষা ছাড়া ৬৫ চিকিৎসক নিয়োগকা-ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত শুরু

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ অ্যাডহক ভিত্তিতে ৬৫ জন চিকিৎসককে নিয়োগ দিয়েছে পরীক্ষা ছাড়াই। নিয়োগের জন্য সংবাদপত্রে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি। সম্প্রতি এ নিয়োগ নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অভিযোগ উঠেছে, নতুন নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকরা বিএনপি-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস ফোরাম অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সদস্য। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। 
গতকাল সোমবার এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ধরনের অনিয়ম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. মাহবুবুল হক অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য ৬৫ জন চিকিৎসকের একটি তালিকা তৈরি করেন। এর অনুমোদন দেন হাসপাতালটির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক। তিনি ড্যাবের সাবেক সভাপতি। আর মাহবুবুল হক ড্যাবের সদস্য। 
গত সপ্তাহে শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি সভার ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে ড্যাবের বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও হাসপাতাল পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এম এ কামাল তার বক্তব্য বলেন, নিয়োগ পাওয়া ৬৫ জন চিকিৎসকই ড্যাবের। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রে কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়নি। শুধু ১ জুন এ বিষয়ে একটি ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এতে জাতীয় বেতন স্কেলে নবম গ্রেডের পাঁচ ধরনের কর্মকর্তার (শিশু মেডিসিন, শিশু সার্জারি, শিশু অ্যানেসথেসিয়া, ইএনটি ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল) ৪২টি পদে ৩৫ বছরের কম বয়সি বাংলাদেশি নাগরিকদের পক্ষ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। বলা হয়, শিশু হাসপাতালে প্রশিক্ষণরত ও অধ্যয়নরত চিকিৎসকেরা চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন, তাদের বয়সও শিথিলযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
এসব বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক মাহবুবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ৬৫ জনের থেকে দুই-চারজন বেশি আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারী সবাই শিশু হাসপাতালের প্রশিক্ষণরত বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। বাইরের কেউ আবেদন করেননি। পরিচালক আরও জানান, নিয়োগের আগে লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। ৪২টি পদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৬৫ জনকে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিচালনা বোর্ডের একটি সভায় ৬৫ জনকে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে এ নিয়োগের বিরোধিতা করে ১ জুলাই শিশু হাসপাতাল চত্বরে মিছিল ও মানববন্ধন করেছে জামায়াত-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন এনডিএফ। সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, এ নিয়োগে পদ্ধতিগত সমস্যা ছিল, স্বচ্ছতার ঘাটতি ছিল। সারা দেশের চাকরিপ্রত্যাশী চিকিৎসকেরা এ নিয়োগ সম্পর্কে জানতেন না, তারা আবেদনই করেননি। কোনো পরীক্ষাও হয়নি।