ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন বিদিশা এরশাদ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৫, ১২:২২ এএম

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী বিদিশা এরশাদ রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিদিশা এরশাদ নিজেই রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আভাস দেন। 
জাপার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার  রাজধানীর বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরশাদপুত্র এরিক এরশাদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে বিদিশা এরশাদ রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আভাস দিয়ে জানান, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন জাপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তার হাতে  গড়া দলটির ঐক্য ধরে রাখতে মাঠে নামতে প্রস্তুত তিনি। 
তিনি বলেন, এরশাদ প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির রাজনীতি দেশের জন্য প্রাসঙ্গিক। আগামী নির্বাচন ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির রাজনীতি মানুষের কাছে আকাক্সক্ষার বিষয়। দলের নেতাকর্মীরা চান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সন্তান এরিকও সক্রিয় হোক। ছেলের মতো আমিও চাই তার পাশে থাকতে, মানুষের জন্য কাজ করতে। 
অনুষ্ঠানে এরিক এরশাদ বলেন, আজ (গতকাল) বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। ছয় বছর হলো তিনি আমাদের মাঝে নেই। বাবা মারা যাওয়ার সময় পৃথিবীতে দুটি জিনিস রেখে গেছেনÑ একটি জাতীয় পার্টি, আরেকটি আমি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর আমি শুধু নিপীড়িতই হইনি, দেখেছি কেমনভাবে তার রেখে যাওয়া দলটিকে হাইজ্যাক করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, জাপার নেতৃত্ব দখল করে জি এম কাদের দলের বড় বড় নেতাকে বহিষ্কার করেছেন, বিভাজন তৈরি করেছেন। অনেক কিছু সহ্য করেছি। মায়ের (বিদিশা এরশাদ) সাহসী উপস্থিতি আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এখন আমি ভালো আছি, কিন্তু দুঃখ হয় বাবার রেখে যাওয়া দলের জন্য। যেভাবে দলটিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা পল্লীবন্ধুর অবমাননা ছাড়া কিছু নয়। 
দলের বর্তমান নেতৃত্বকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা ১৭ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন, মন্ত্রী, এমপি হয়েছেন, হাজার কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। এখন থামুন, নাতি-নাতনিদের সময় দিন। নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বে আসতে দিন। এখন থেকে ইয়াং জেনারেশনই জাতীয় পার্টি চালাবে। তিনি আরও বলেন, আজকের দিনটিকে নিয়ে রাজনীতি নয়। আমার অনুরোধ, বাবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন। পল্লীবন্ধুকে অপমান নয়, সম্মান দিন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তা বলেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করে এরশাদ দেশের শতকরা নব্বই ভাগ মানুষের মনের আশা পূরণ করেছেন। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে তিনি দেশের সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এরশাদ সংবিধানে যেভাবে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেছেন, তা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ তিনি মসজিদের উন্নয়নে যেমন বরাদ্দ দিয়েছেন, তেমনিভাবে মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাতেও বরাদ্দ দিয়েছেন।
আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিলে এরশাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এরিকের ঘনিষ্ঠজন, পারিবারিক সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীরা।